ভারত ‘অমূল্য’ উপহার দিতে চেয়েছিল সার্কের সাতটি দেশকেই। পাকিস্তান মুখ ফিরিয়ে রাখায় দক্ষিণ এশিয়ার বাকি ছ’টি দেশের জন্য ওই উপহার আজ মহাকাশে পাঠাল ভারত। এমন এক সময়ে, যখন বন্ধুত্বে নারাজ প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক খুবই তিক্ত।
ভারত আজ শ্রীহরিকোটার সতীশ ধবন মহাকাশ কেন্দ্র থেকে জিএসএলভি-এফ০৯ রকেটে ‘জিস্যাট-৯’ নামে এক কৃত্রিম উপগ্রহকে পাঠিয়েছে। টেলিকম, টেলি-মে়ডিসিন, সুনামি, ঘূর্ণিঝড়ের মতো বিপর্যয় মোকাবিলায় সাহায্য করবে এটি। বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মলদ্বীপ এবং আফগানিস্তানও এর সুবিধা পাবে। নিজেদের মধ্যে হটলাইনে যোগাযোগও রাখতে পারবে তারা। এই ‘দক্ষিণ এশীয় উপগ্রহ’ তৈরি ও উৎক্ষেপণে খরচ হয়েছে ২৩৫ কোটি টাকা, যার পুরোটাই দিয়েছে ভারত।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ উপগ্রহটি উৎক্ষেপণের আগে প্রতিবেশী দেশগুলির রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন। এবং উৎক্ষেপণের পরে মোদীর টুইট, ‘‘দক্ষিণ এশীয় উপগ্রহের সফল উৎক্ষেপণ একটি ঐতিহাসিক মূহূর্ত। সম্পর্কের নতুন দিক খুলে গেল।’’ গত ৩০ এপ্রিল আকাশবাণীতে তাঁর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে মোদী এই উপগ্রহকে চিহ্নিত করেছিলেন ‘অমূল্য উপহার’ হিসেবে। কূটনীতিকদের মতে, দক্ষিণ এশিয়ার গোষ্ঠী রাজনীতিতে নিজের প্রভাব বাড়াতে তাকেই তুরুপের তাস করলেন মোদী। যদিও পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র নাফিস জাকারিয়া বলেন, ‘‘দিল্লি বুঝিয়ে দিয়েছে এই উদ্যোগে সকলকে সামিল করতে তারা আগ্রহী নয়।’’
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, এই উপগ্রহ-কূটনীতির জেরে শুধু পাকিস্তান নয়, তাদের অন্যতম মিত্র চিনও কিছুটা চাপে পড়তে পারে। নেপাল, বাংলাদেশের উপরে চিনের প্রভাব রয়েছে। সেই দেশগুলির উন্নয়নে ভারত যে ভাবে নিজেকে শরিক করে তুলল, তাতে চিনের প্রভাবে কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে। পাশাপাশি, উপগ্রহ-নজরদারি নিয়েও চিন্তা বাড়বে বেজিংয়ের।
ইসরোর মুখপাত্র বি আর গুরুপ্রসাদ জানিয়েছেন, আজ বিকেল ৪টে ৫৭ মিনিটে শ্রীহরিকোটা দ্বিতীয় লঞ্চপ্যাড থেকে ২,২৩০ কিলোগ্রাম ওজনের উপগ্রহটিকে নিয়ে রওনা দেয় জিএসএলভি রকেট। ১৭ মিনিটের উড়ান শেষে উপগ্রহটিকে নির্দিষ্ট কক্ষপথে স্থাপন করা হয়। মহাকাশে ঠিকঠাক কাজও শুরু করে দিয়েছে ভারতের বন্ধুত্বের এই দূতটি।