ব্রিটেনকে টপকে গেল ভারত। অর্থনীতির মানদণ্ডে।
বলা ভাল, দু’শো বছরের ঔপনিবেশিক শাসনের বদলা নিল ভারত! গত দেড়শো বছরে এই প্রথম ব্রিটেনের অর্থনীতিকে পিছু হটতে হল এক সময় ‘রানির রাজদণ্ড’ যাকে শাসন করত, সেই ভারতের অর্থনীতির কাছে! সংখ্যাতত্ত্বের হিসেব কষে এমনটাই জানিয়েছে ‘ফোর্বস’ ম্যাগাজিন।
কী ভাবে সম্ভব হল এই ‘উলটপুরাণ’?
‘ফোর্বস’ জানিয়েছে তার দু’টি কারণ। এক, গত ২৫ বছরে অপ্রত্যাশিত গতিতে এগিয়েছে ভারতীয় অর্থনীতি। আর দুই, ‘ব্রেক্সিট’ গণভোটের পর একের পর এক অস্থিরতা আর সমস্যায় উত্তরোত্তর পিছিয়ে পড়েছে ব্রিটেনের অর্থনীতি। গত এক বছরে হুড়মুড়িয়ে পড়ে গিয়েছে পাউন্ডের দাম। ফলে, ভারতীয় টাকার সঙ্গে দামের ফারাকটা অনেকটাই কমে গিয়েছে পাউন্ডের। যা পরোক্ষে ভারতীয় অর্থনীতির ‘পেশি’গুলিকে আরও মজবুত করে তুলেছে।
আরও পড়ুন- গত দশ মাসে দাম সবচেয়ে কম, তাও ঝিমোচ্ছে সোনা
‘ফোর্বস’ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত একটি অর্থনৈতিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‘যে ভাবে গত ২৫ বছরে তরতরিয়ে এগিয়ে গিয়েছে, তাতে ভারতীয় অর্থনীতি যে ব্রিটেনের জিডিপি’র হারকে পিছনে ফেলে দেবে, তা প্রত্যাশিতই ছিল। তবে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা ছিল, সেটা হবে ২০২০ সাল বা তার সামান্য কিছু পরে। কিন্তু ৪/৫ বছর আগেই যে সেটা হয়ে গেল, তার এক ও একমাত্র কারণ, ‘ব্রেক্সিট’ গণভোটের পর গত এক বছরে ব্রিটিশ মুদ্রা পাউন্ডের দাম হুড়মুড়িয়ে কমে গিয়েছে প্রায় ২০ শতাংশ।’’
ভারতীয় অর্থনীতির ধমনী কতটা চনমনে?
‘ফোর্বসে’র রিপোর্ট বলছে, ‘‘ভারতীয় অর্থনীতির বৃদ্ধি-হার বছরে ৬ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৮ শতাংশ। আর ব্রিটেনের আর্থিক বৃদ্ধি-হারটা কমতে কমতে বছরে ১ থেকে ২ শতাংশের মধ্যেই আটকে গিয়েছে। সেটা থমকে থাকবে ২০২০ সাল বা তার কিছু সময় পর পর্যন্ত।
উৎসাহে টুইট করে ফেলেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। লিখেছেন, ‘‘ব্রিটেনকে টপকে গিয়ে আমেরিকা, চিন, জাপান ও জার্মানির পর ভারতীয় অর্থনীতিই সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠল। ভারতের কাঁধে জনসংখ্যার বোঝাটা ভারী হলেও, এটা নিংসন্দেহেই ভারতীয় অর্থনীতির উল্লম্ফন।’’
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সেই টুইট
পাঁচ বছর আগে ইকোনমিক থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক সংস্থা ‘ইকোনমিক অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ’ ( সিইবিআর)-এর পূর্বাভাস ছিল, ২০২০ সালের মধ্যেই ভারতের অর্থনীতি হয়ে উঠবে বিশ্বের ‘পঞ্চম শক্তিশালী অর্থনীতি’। গত ৮ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের (আইএমএফ) একটি সমীক্ষাতেও বলা হয়েছিল খুব শিগগিরই ইউরোপীয় দেশগুলির অর্থনীতির বৃদ্ধি-হারকে ছাপিয়ে যাবে ভারতীয় অর্থনীতি।
সেই পূর্বাভাসই সত্যি হল! তবে মেয়াদ ফুরনোর অনেকটা আগেই!