বিটকয়েন-সহ ক্রিপ্টোকারেন্সি দেশে নিষিদ্ধ ছিলই। কিন্তু সেটা ছিল ঘুরপথে। এ বার আইন করে ক্রিপ্টোকারেন্সি নিষিদ্ধ করার পথে এগোচ্ছে কেন্দ্র। বিটকয়েনের লেনদেন প্রমাণিত হলে ফৌজদারি অপরাধের ধারাও যুক্ত হচ্ছে এই বিলে। আর এই খবর সামনে আসতেই রেকর্ড উচ্চতা থেকে অনেকটাই দাম পড়ল বিটকয়েনের।
আমেরিকায় নতুন আর্থিক প্যাকেজ এবং টিকাকরণের প্রক্রিয়া জোরদার করায় শনিবার বিটকয়েনের সর্বোচ্চ দাম উঠেছিল ৬১,৭৮১ ডলার। কিন্তু সোমবার সেখান থেকে ৫ শতাংশেরও বেশি নেমে দাম হয়েছে ৫৫,৮৬৫ ডলারের মতো। যদিও এই পতন সাময়িক বলেই মনে করছেন ক্রিপ্টোকারেন্সি বিশেষজ্ঞদের একাংশ। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের মতো বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির তরফে বিটকয়েন পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার পথে এগনো এবং লেনদেনকে ফৌজদারি অপরাধের যোগ্য করার প্রচেষ্টা চলছে। তার প্রভাব পড়েছে গোটা বিশ্বের বাজারেই।
২০১৯-এর জুলাইয়ে ভারতে বিটকয়েন-সহ সমস্ত ক্রিপ্টোকারেন্সির লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে একটি নির্দেশিকা পাঠিয়ে আরবিআই জানিয়ে দিয়েছিল, ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনা-বেচা বা লেনদেন করে এমন কোনও অ্যাপে টাকা ট্রান্সফার করতে পারবে না কোনও ব্যাঙ্ক। তার ফলে সরাসরি ক্রিপ্টোকারেন্সি নিষিদ্ধ না হলেও এর লেনদেন বন্ধ হয়ে যায়। এ বার পাকাপাকি ভাবে ক্রিপ্টোকারেন্সি বন্ধ করতে বিল আনার প্রক্রিয়া কেন্দ্র শুরু করেছে বলে সরকারি একটি সূত্রে জানা গিয়েছে। সংশ্লিষ্ট এক পদস্থ আধিকারিককে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বিটকয়েন কেনা-বেচা, লেনদেন বা মাইনিং-এর সঙ্গে কেউ যুক্ত থাকার প্রমাণ মিললে তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হবে— এমন একটি বিল তৈরির প্রস্তুতি চলছে। জানুয়ারির মধ্যেই বিল তৈরি হয়ে যাবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন ওই আধিকারিক। তার পর সংসদে পেশ করে পাশ করলেই তা আইনে পরিণত হবে।
২০১৯-এ নিষিদ্ধ করার সময়ই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছিল, ভারতে নিজস্ব ক্রিপ্টোকারেন্সি তৈরির বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। সেই প্রক্রিয়া আরও অনেকটাই এগিয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের একাধিক সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশের আশঙ্কা, গত এক বছরে প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে বিটকয়েনের দাম। অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সির দামও বেড়েছে প্রায় সমান তালে। কিন্তু ভারতের নিজস্ব ক্রিপ্টোকারেন্সি সেই প্রতিযোগিতায় কতটা সাফল্য পাবে এবং বিনিয়োগকারীরা তার উপর কতটা আস্থা রাখতে পারবেন, তা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশ।