Sri Lanka Crisis

Sri lanka Crisis: শ্রীলঙ্কায় সাবধানি ভারত, ইঙ্গিত দিলেন জয়শঙ্কর

অপেক্ষা করা হচ্ছে ঘটনার গতি কোন দিকে এগোয় তা দেখে নেওয়ার জন্য।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২২ ০৭:৫৮
Share:

ফাইল ছবি

বুধবার শ্রীলঙ্কায় নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এবং পরবর্তী পর্যায়ে সে দেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার দিকে সতর্ক নজর রাখছে নয়াদিল্লি। তবে এখনও শ্রীলঙ্কার কোনও বিশেষ দল বা প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলা বা কারও প্রতি পক্ষপাত দেখানো হচ্ছে না। অপেক্ষা করা হচ্ছে ঘটনার গতি কোন দিকে এগোয় তা দেখে নেওয়ার জন্য। মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কা পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদলীয় সংসদীয় নেতাদের বৈঠক ডেকেছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বৈঠকের পরে এক প্রশ্নের উত্তরে এ কথা জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ ‘অর্থনৈতিক’, ‘সামাজিক’ এবং ‘রাজনৈতিক’ সঙ্কটের কথা আজ উল্লেখ করেছেন বিদেশমন্ত্রী। কিন্তু সে দেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় কোনও রকম ভূমিকা নেওয়ার কথা অস্বীকারও করেছেন। কোন সরকার শ্রীলঙ্কায় এলে ভারত স্বচ্ছন্দ বোধ করবে? এই প্রশ্নের উত্তরে জয়শঙ্কর বলেছেন, “আগামীকাল সে দেশে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। সেখানে কী হয় দেখাই যাক না।” ভারত কী আলাদা ভাবে কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলছে? জয়শঙ্কর বলেন, “না, আমরা এখনই কোনও পক্ষ বা দলের সঙ্গে যোগাযোগ করিনি।”

কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, আপাতত যিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন তাঁর সঙ্গেই শ্রীলঙ্কাবাসীর পাশে থাকার জন্য কাজ করবে নয়াদিল্লি। প্রয়োজনে আর্থিক সহায়তা বাড়ানো হবে। কিন্তু কোনও রাজনৈতিক দলের বা সরকারের সঙ্গে নিজেদের অক্ষ দেখিয়ে বর্তমান জনরোষের লক্ষ্যে আসতে নারাজ সাউথ ব্লক। এখন সে দেশের অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক গতিপথের কোনও নিশ্চয়তা নেই। তাই আপাতত বুঝে শুনে পা ফেলাই শ্রেয় বলে মনে করা হচ্ছে। জয়শঙ্করের কথায়, “বল এখন শ্রীলঙ্কার কোর্টে। কলম্বো এবং আইএমএফ-এর নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া হওয়া উচিত। এই পরিস্থিতি থেকে তাদেরই বেরিয়ে আসতে হবে। শ্রীলঙ্কাবাসীর জন্য আমাদের সদিচ্ছা স্পষ্ট। প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলিই আমাদের বিদেশনীতির অগ্রাধিকার।”

Advertisement

শ্রীলঙ্কাকে ভারতের দেওয়া ৩৮০ কোটি ডলার সহায়তার উল্লেখ করে বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতির এর চেয়ে ভাল উদাহরণ আর হয় না। তাঁর কথায়, “শ্রীলঙ্কায় যে ভয়ং‌কর সঙ্কট দেখা দিয়েছে তা অভূতপূর্ব। যা ঘটছে তার সামাজিক অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক পরিণতি রয়েছে। আমাদের জন্য তা অবশ্যই উদ্বেগের। প্রতিবেশী কোনও দেশে হিংসা বা অর্থনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হলে তার প্রভাব ভারতের উপরে পড়তে বাধ্য।”

সূত্রের মতে, আজ বিরোধী দলের সাংসদদের সামনে যে বিস্তারিত ‘স্লাইড চিত্র’ তুলে ধরেছে বিদেশ মন্ত্রক। সেখানে সঙ্কটের উৎস হিসেবে চারটি কারণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলি যথাক্রমে, রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক সঙ্কট, শোধ করা যাবে না এমন পরিমাণ ঋণ নেওয়া, বিদেশি মুদ্রার ঘাটতি। সে দেশের ঋণভারের বিশ্লেষণ করে দেখানো হয়েছে, মোট ঋণের ১০ শতাংশ নেওয়া হয়েছে চিনের থেকে। বাজার থেকে নেওয়া হয়েছে ৪৭ শতাংশ, ‘মাল্টিল্যাটারাল ডেভেলপমেন্ট’ ব্যাঙ্কগুলি থেকে ২২ শতাংশ। অর্থনৈতিক সঙ্কটের বিভিন্ন উপাদান হিসেবে লেখচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে মোট বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারের ক্রমাবনতি, বাইরে থেকে অর্থের আমদানি কমে আসা, সরকারের আয় কমে আসা, মূল্যবৃদ্ধি, বকেয়া ঋণ বেড়ে যাওয়ার মতো বিষয়গুলি। জানুয়ারি মাস থেকে ভারত যে সহায়তা করে আসছে কলম্বোকে সেগুলিও বিশদে তুলে ধরা হয়েছে আজ। তার মধ্যে রয়েছে পরে শোধ নেওয়া হবে এই শর্তে ডলার ১৫০ কোটি ডলার ধার, খাদ্য, জ্বালানি এবং ওষুধের জন্য ১০০ কোটি ডলার। আগামী দিনে সঙ্কট মুক্তির দু’টি দিক নির্দেশ করা হয়েছে। একটি রাজনৈতিক অন্যটি অর্থনৈতিক। অর্থনৈতিক দিকের মধ্যে দেনা শোধের শর্ত সহজ করে দেওয়ার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement