ছবি সংগৃহীত।
করোনা আবহে বিভিন্ন দেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনতে ‘বন্দে ভারত মিশন’ চালু করেছে ভারত। কিন্তু এয়ার ইন্ডিয়ার চার্টার্ড বিমানে আমেরিকা থেকে ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনতে হলে এ বার থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের আগাম অনুমতি নিতে হবে। সোমবার মার্কিন বিমান পরিবহণ দফতর এ কথা জানানোর পাশাপাশি অভিযোগ করেছে, বন্দে ভারত মিশনে আমেরিকায় চার্টার্ড বিমান পরিষেবা চালাতে গিয়ে ভারত সরকার ‘অন্যায্য ও পক্ষপাতমূলক’ পদক্ষেপ করছে।
আমেরিকার বক্তব্য, একতরফা ভাবে বিমান চালিয়ে নিজেদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিচ্ছে ভারত। অথচ তাদের বিমান সংস্থাগুলিকে উদ্ধারকাজ চালাতে দেওয়া হচ্ছে না। মার্কিন বিমান সংস্থাগুলিকে ভারতে উদ্ধারকাজ চালাতে অনুমতি না দিলে, আগামী ২২ জুলাই থেকে আমেরিকায় বিমান চালাতে মার্কিন পরিবহণ দফতরের থেকে এয়ার ইন্ডিয়াকে অনুমোদন নিতে হবে। সে দেশের সরকারের যুক্তি, ভারত-মার্কিন বিমান পরিবহণ চুক্তি অনুযায়ী আমেরিকার বিমান সংস্থাগুলিও যাতে সমান সুযোগ পায়, সেটাই দেখতে চায় তারা।
নয়াদিল্লিতে বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের আধিকারিকেরা অবশ্য মনে করছেন, যত সংখ্যায় ভারতীয়েরা আমেরিকায় আটকে পড়েছেন, সেই তুলনায় ভারতে আটকে থাকা মার্কিন নাগরিকদের সংখ্যা নগণ্য। ফলে মার্কিন সংস্থাগুলির বিমান চললেও ভারতীয় যাত্রীদের উপরেই নির্ভর করতে হবে তাদের। তবে আমেরিকা-সহ অন্য দেশে এত বেশি সংখ্যক ভারতীয় আটকে রয়েছেন যে অনেকেই বন্দে ভারত উড়ানে জায়গা পাচ্ছেন না। আমেরিকার উড়ান সংস্থাগুলি উদ্ধারকারী উড়ান চালাতে শুরু করলে তাঁরা উপকৃত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। নয়াদিল্লিতে বিমান পরিবহণ মন্ত্রক সূত্রের খবর, উদ্ধারকারী উড়ান চালানোর ক্ষেত্রে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানির মতো কয়েকটি দেশের সঙ্গে এ বার চুক্তি করতে চলেছে কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: ‘ভূমিপুত্রের ভরসায় আত্মনির্ভর আমেরিকা’, দুশ্চিন্তা তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে
মার্কিন সরকারের বক্তব্য, করোনা পরিস্থিতিতে ভারত আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা বন্ধ করলেও এয়ার ইন্ডিয়া আমেরিকায় আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফেরাতে চার্টার্ড বিমানের ব্যবস্থা করেছে। সেই বিমানে ভারতে আটকে পড়া মার্কিন নাগরিকদেরও দেশে ফেরানো হচ্ছে। মার্কিন পরিবহণ দফতরের অভিযোগ, এয়ার ইন্ডিয়া যে ভাবে বাজারে টিকিট বিক্রি করছে এবং যত সংখ্যায় বিমান চালাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে, উদ্ধারকাজের বিষয়টিকে ছাপিয়ে গিয়েছে তারা। সরকারি ভাবে যাত্রিবাহী আন্তর্জাতিক উড়ান বন্ধের সিদ্ধান্তের মধ্যে এ ভাবে চার্টার্ড বিমান চালিয়ে কার্যত বোকা বানাতে চাইছে তারা। টিকিট বিক্রিতেও বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। ভারতীয় বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের আধিকারিকদের দাবি, উদ্ধারকারী উড়ানে যাত্রীদের থেকে বাজারদর অনুযায়ী ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। তবে লকডাউনের বাজারে এ ভাবে ভারতীয় উড়ান সংস্থাগুলিকে ব্যবসা করতে দেখেই আমেরিকার উড়ান সংস্থাগুলি আপত্তি জানিয়েছে বলেও মনে করছেন কেউ কেউ।
আরও পড়ুন: স্বার্থের অঙ্কেই ভারত-চিন দ্বন্দ্ব মেটাতে সক্রিয় রাশিয়া