ইমরান খান। ছবি: রয়টার্স।
পুরনো স্বভাব কি সহজে বদলানো যায়? টুইটারে ভুয়ো ভিডিয়ো পোস্ট করে প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে অস্বস্তিতে ফেলতে ইমরান খানের প্রচেষ্টাকে এ ভাবেই কটাক্ষ করল ভারত। সেই সঙ্গে জানিয়ে দিল, এক বার নয়, এর আগেও এমন কাণ্ড করেছে পাকিস্তান। শনিবার রাষ্ট্রপুঞ্জে নিযুক্ত ভারতের স্থায়ী দূত সৈয়দ আকবরউদ্দিন টুইটারে একটি ছোট ভিডিয়ো ক্লিপিংস পোস্ট করে লিখেছেন, ‘রিপিট অফেন্ডার্স... ’।
শুক্রবার নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে একটি ভুয়ো ভিডিয়ো পোস্ট করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দাবি করেছিলেন, ‘‘এ ভাবেই যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে মুসলমানদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।’’ ওই ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, এক ব্যক্তির উপর লাঠিচার্জ করছেন পুলিশের উর্দিধারীরা। সেই সঙ্গে ইমরানের আরও দাবি ছিল, এ ধরনের অত্যাচার আসলে মুসলিমদের দেশছাড়া করতে মোদী সরকারের ভারতীয় পুলিশের হামলার অঙ্গ।
তবে ওই ভিডিয়ো পোস্ট করার পরই তুমুল শোরগোল পড়ে যায় নেটিজেনদের মধ্যে। ইমরানের ভুল ধরিয়ে তাঁরাই সরবে জানিয়ে দেন, ওই ভিডিয়োটি আসলে সাত বছর আগেকার বাংলাদেশের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে। তার সঙ্গে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের কোনও সম্পর্ক নেই। এ নিয়ে ইমরানের টুইটারে উত্তরপ্রদেশ পুলিশও জানায়, ‘‘এটা উত্তরপ্রদেশের নয়, বরং ২০১৩-র মে মাসে বাংলাদেশের ঢাকার একটি ঘটনা। উর্দিতে লেখা রয়েছে র্যাব (র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন)।’’ ভিডিয়ো পোস্ট করার ঘণ্টাদুয়েকের মধ্যেই অবশ্য তা সরিয়ে দেওয়া হয়। তবে তত ক্ষণে গোটা ঘটনায় যে পাকিস্তান তথা ইমরানের মুখ পুড়েছে তা নিয়ে অনেকেই একমত।
আরও পড়ুন: ভারতে পুলিশি ‘অত্যাচার’ দেখাতে বাংলাদেশি ছবি, ট্রোলড হয়ে ছবি সরিয়ে নিলেন ইমরান
এ দিন ইমরানের ওই ভিডিয়ো ছাড়াও ২০১৭-র আরও একটি ভিডিয়োর ক্লিপিংসও দেখা গিয়েছে আকবরউদ্দিনের টুইটে। সে সময় রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় কাশ্মীরের নাম করে গাজা ভূখণ্ডের একটি ছবি তুলে ধরে পাকিস্তান। ওই ছবি দেখিয়েই রাষ্ট্রপুঞ্জে পাকিস্তানের স্থায়ী দূত মালিহা লোদীর দাবি ছিল, সেটি কাশ্মীরে নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর ছররা বন্দুকের ঘায়ে আহত একটি কিশোরীর। তবে সেই ছবিটি আসলে ছিল গাজা-র এক ১৭ বছরের কিশোরী রাওয়া আবু জমের। গাজায় যুদ্ধের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে মার্কিন চিত্রসাংবাদিক হাইদি লেভিন ২০১৪-র ২২ জুলাই ওই ছবি তুলেছিলেন।
আকবরউদ্দিন ছাড়াও এ দিন ইমরানকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার। টুইটারে লিখেছেন, ‘‘ভুয়ো খবর টুইট করুন। ধরা পড়ুন। টুইট সরিয়ে দিন।’’ সেই সঙ্গে আকবরউদ্দিনের মতোই তাঁরও হ্যাশট্যাগে মন্তব্য, ‘‘পুরনো স্বভাব সহজে মরে না’’।