ইন্ডিয়া-র মুম্বই বৈঠক। ফাইল চিত্র।
ইন্ডিয়া-র ডাকা বৈঠক বাতিল হয়ে গেল। বুধবার এই জোটের সদস্যদের নিয়ে দিল্লিতে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিরোধী দলের শীর্ষ নেতারা এই বৈঠকে থাকতে পারবেন না জানিয়ে দেওয়ায়, আপাতত বৈঠক স্থগিত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ় এবং রাজস্থান— এই তিন রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির জয় এবং দলের শোচনীয় ফলে লোকসভা নির্বাচনের রণনীতি ঠিক করতে তড়িঘড়ি ‘ইন্ডিয়া’র শরিকদের নিয়ে ৬ ডিসেম্বর বৈঠক ডেকেছিল কংগ্রেস। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, ওই বৈঠকে তিনি হাজির থাকতে পারবেন না। উত্তরবঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। সূত্রের খবর, একই কারণে ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে হাজির থাকতে পারবেন না তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সূত্রের খবর, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং সপা-র প্রধান অখিলেশ যাদবও ওই বৈঠকে থাকতে পারবেন না। ফলে একের পর এক শীর্ষ নেতারা বৈঠকে না থাকার সম্ভাবনা প্রবল হওয়ায় বৈঠক বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
শুধু মমতা, নীতীশ কুমার বা অখিলেশ যাদবই নয়, সূত্রের খবর, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনও এই বৈঠকে থাকতে পারবেন না বলে একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কারণ তামিলনাড়ুতে ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের তাণ্ডব চলছে। পরিস্থিতির উপর নজরদারি চালাতে হচ্ছে তাঁকে। ফলে বৈঠকে হাজির না থাকার সম্ভাবনা জোরালো হয়েছিল।
তিন রাজ্যে কংগ্রেসের হার নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে জোট শরিকদের মধ্যেই। সূত্রের খবর, আসন সমঝোতা, আগামী লোকসভা নির্বাচনে কী ভাবে বিজেপিকে রুখে দেওয়া যাবে ইত্যাদি রণকৌশল নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে শরিক দলগুলির ‘মতপার্থক্য’ প্রকাশ্যে আসে। সম্প্রতি পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে চার রাজ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে ‘ইন্ডিয়া’র শরিক দলগুলির সঙ্গে একটা ‘অসন্তোষের’ আবহ তৈরি হয়েছিল। বিজেপি বিরোধী ছোট আঞ্চলিক দল, কংগ্রেস ভেঙে তৈরি হওয়া দল এমনকি, বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র শরিকদেরও ভোটের ময়দানে এক ছটাকও জায়গা দিতে চায়নি কংগ্রেস। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করছেন, কংগ্রেসের এই মনোভাব শরিক দলগুলির সঙ্গে ‘দূরত্ব’ বাড়াচ্ছে।
যেমন, মধ্যপ্রদেশের ৬টি আসন চেয়েছিলেন ‘ইন্ডিয়া’র শরিক সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ। কিন্তু সূত্রের খবর, শেষ পর্যন্ত তা দিতে রাজি হননি রাহুল গান্ধীরা। পরে ৭১ আসনে প্রার্থী দিয়ে অখিলেশ ঘোষণা করেছিলেন, কংগ্রেসের ‘বেমাইনির’ জবাব দেবেন তিনি। শুধু মধ্যপ্রদেশ নয়, হিন্দি বলয়ের অন্য দুই রাজ্য ছত্তীসগঢ় এবং রাজস্থানে কংগ্রেসের ভরাডুবির ‘কারণ’ হিসাবেও উঠে এসেছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, সাংগঠনিক দুর্বলতা, প্রচারের দিশাহীনতার পাশাপাশি, ‘একলা চলো’র প্রবণতার কথা।