প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
শীত বিদায় নিয়েছে। তবে দেশের বিভিন্ন জায়গায় এখনও হালকা শীতের আমেজ রয়েছে। কিন্তু, পাখা চালাতে শুরু করে দিয়েছেন অনেকেই। কেউ কেউ তো আবার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) চালাতে শুরু করেছেন। এ হেন পরিস্থিতিতে মার্চের শুরু থেকেই ‘এল নিনো’র পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে মৌসম ভবন। গ্রীষ্মকাল পড়লেই ‘এল নিনো’র দাপটে ভুগবে গোটা দেশ। চলতি বছর স্বাভাবিকের থেকে তাপমাত্রা বেশি থাকবে, এমনই মনে করছেন আবহবিদেরা। শুধু তা-ই নয়, তীব্র তাপপ্রবাহের আশঙ্কাও করা হচ্ছে।
গত বছরই পরিবেশ বিজ্ঞানীরা ‘এল নিনো’র দাপটের কথা বলেছিলেন। তাঁদের পূর্বাভাস ছিল, চলতি বছরে তাপমাত্রা রেকর্ড হারে বৃদ্ধি পাবে। সেই পূর্বাভাসই সত্যি হতে চলেছে। আবহবিদদের কথায়, দক্ষিণ ভারতেই সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলবে ‘এল নিনো’। তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং কর্নাটকের কয়েকটি জেলায় তাপপ্রবাহের দাপট থাকবে। শুধু দক্ষিণ ভারত নয়, ওড়িশা এবং মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যেও তাপমাত্রা বাড়বে। কোথাও কোথাও এপ্রিল মাসেই তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়াবে বলেও আশঙ্কাও করা হচ্ছে।
মৌসম ভবন সূত্রে খবর, মার্চ মাস থেকে মে মাস পর্যন্ত ভারতের বেশির ভাগ অংশে স্বাভাবিকের থেকে বেশি তাপমাত্রা থাকবে। মার্চ মাসে উত্তর এবং মধ্য ভারতে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তবে চলতি মাসে স্বাভাবিকের থেকে বেশি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টির পরিমাণ আনুমানিক গড়ে ২৯.৯ মিলিমিটার হবে। তবে সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও বেশি থাকবে।
মৌসম ভবনের ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গেও মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেশি থাকারই সম্ভাবনা রয়েছে। রাতের দিকে গরম বাড়বে।’’ গত মরশুমে ‘এল নিনো’র ভয়াবহতা দেখেছে ভারত। আবহবিদদের কথায়, গত বছরের থেকে এ বছর তাপমাত্রা আরও বাড়বে। অতীতে ২০১৬ সাল ছিল বিশ্বের উষ্ণতম বছর। ‘এল নিনো’র জেরে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছিল ভারতকেও। ২০২৩ সালেও সেই দাপট দেখা গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, ২০২৪ সাল গরমের সব রেকর্ড ভেঙে দিতে পারে।
‘এল নিনো’ কী, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে অনেকের মনে। পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের পশ্চিম উপকূল ঘেঁষে পেরু, ইকুয়েডর বরাবর কোনও কোনও বছর ডিসেম্বর মাস নাগাদ এক প্রকার দক্ষিণমুখী উষ্ণ স্রোতের সৃষ্টি হয়। এরই নাম 'এল নিনো'। পেরু, ইকুয়েডর উপকূলেই মাঝেমাঝে এল নিনোর বিপরীত একটি শীতল স্রোত সৃষ্টি হয়। তার নাম 'লা নিনা'। দুই স্রোতের প্রভাব পড়ে বিশ্বের আবহাওয়ায়।