ভাইরাল হয়েছে এই সব ছবি।
চাকা লাগানো কাঠের পাটাতনে বসে রয়েছেন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও শিশুকন্যা। সেই পাটাতন টেনে নিয়ে চলেছেন এক যুবক। ৭০০ কিলোমিটার পথের অধিকাংশ এ ভাবেই পাড়ি দিয়ে হায়দরাবাদ থেকে মধ্যপ্রদেশের বালাঘাটে নিজের গ্রামে পৌঁছেছেন পরিযায়ী শ্রমিক রামুর পরিবার। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে সেই ভিডিয়ো।
রামু জানিয়েছেন, শুরুতে শিশুকন্যা কোলে নিয়ে তিনি ও তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ধন্বন্তা হাঁটতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু ধন্বন্তার পক্ষে এতটা পথ হাঁটা সম্ভব ছিল না। সারাদিনে মেলেনি খাবারও। রাস্তায় কাঠের পাটাতন জোগাড় করে তাতে চাকা লাগিয়ে অস্থায়ী বন্দোবস্ত করেন রামু। তবে তেলঙ্গানা থেকে মহারাষ্ট্রে প্রবেশের পরে এসডিও নীতেশ ভার্গবের নেতৃত্বাধীন পুলিশের একটি দলের নজরে আসে অসহায় ওই শ্রমিক পরিবারটি। সকলের খাবারের বন্দোবস্ত করে পুলিশ। রামুর কন্যাকে এক জোড়া জুতো দেন নীতেশ। তাঁর কথায়, ‘‘ওই পরিবারের শারীরিক পরীক্ষা করানোর পরে বাড়ি পৌঁছনোর জন্য গাড়ির বন্দোবস্ত করা হয়।’’ মঙ্গলবার গ্রামে পৌঁছেছে রামুরা। আপাতত ১৪ হোম কোয়রান্টিনে থাকতে হবে তাঁদের।
অপর এক ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, ক্লান্ত হয়ে সুটকেসের উপরেই ঘুমিয়ে পড়েছে এক খুদে। আগরা হাইওয়ের উপর দিয়ে সন্তান-সহ সুটকেস টেনে নিয়ে চলেছেন এক মহিলা। পঞ্জাব থেকে এ ভাবেই ৮০০ কিলোমিটার দূরে ঝাঁসির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন ওই মহিলা।
আরও পড়ুন: হাতে এক নয়া পয়সাও নয়, পরিযায়ী-পাতে শুধুই চাল, ডাল
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল অপর একটি ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, বলদকে সঙ্গে নিয়ে গাড়ি টেনে নিয়ে চলেছেন এক পরিযায়ী শ্রমিক। গাড়িতে ভাই ও শাশুড়ি। এ ভাবেই ইনদওরের মও থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে পাত্থর মুন্ডলা গ্রামে পৌঁছেছেন তাঁরা।
লকডাউনের জেরে একদিকে কাজ নেই। জুটছে না ভরপেট খাবারও। তার সুবাদেই ঘরে ফিরতে মরিয়া ভিন্ রাজ্যে কাজে যাওয়া শ্রমিকেরা। ইতিমধ্যেই ট্রেনের তলায় ছিন্নভিন্ন হয়েছে ১৬ জনের দেহ। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও অনেকে। এমনকি রাস্তায় প্রসবের ঘটনাও সামনে এসেছে। মোদী-শাহের রাজ্য গুজরাতে সুরত, কচ্ছে একের পর এক শ্রমিক অসন্তোষে জেরবার রূপাণী সরকারও। কেন্দ্রের তরফে শ্রমিকদের ফেরাতে বিশেষ ট্রেনের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। কিন্তু তা যে প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য, রামুদের ঘটনা সেই ছবিই তুলে ধরেছে।
আরও পড়ুন: ৫০ লক্ষ হকার, ঠেলাওয়ালা মাথা পিছু ১০ হাজার টাকা ব্যাঙ্কঋণ পাবেন: নির্মলা