একসঙ্গে ছ’টি ইস্যু তুলে আক্রমণ রাহুল গাঁধীর। —ফাইল চিত্র
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পর্ব থেকে প্রায় প্রতিদিন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে চলেছেন রাহুল গাঁধী। সব আক্রমণেরই নিশানা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ বার একসঙ্গে সব ইস্যুকে এক জায়গায় এনে আক্রমণ শানালেন কংগ্রেস সাংসদ। জিডিপির নজিরবিহীন পতন, কর্মসংস্থানের বেহাল দশা, চাকরি খোয়ানো, জিএসটি থেকে করোনাভাইরাস— সবই মোদীর তৈরি বিপর্যয় বলে আখ্যা দিয়েছেন রাহুল। বলেছেন, এই সবের জেরে ধুঁকছে দেশ।
যেন বিপর্যয়ের তালিকা। ক্রমিক সংখ্যা ধরে ১ থেকে ৬ পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ের উল্লেখ করে টুইটারে আক্রমণ শানিয়েছেন রাহুল গাঁধী। সোমবারই কেন্দ্রের প্রকাশিত তথ্যে দেখা গিয়েছে গত বছর এই সময়ের তুলনায় ‘২০-’২১ অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে জিডিপি ২৩.৯ শতাংশ নেমে গিয়েছে। যা গত চার দশকে হয়নি। রাহুল সেই বিষয়টিকে ‘ঐতিহাসিক জিডিপি হ্রাস’ বলে উল্লেখ করেছেন। বিশেষজ্ঞদের অধিকাংশই মনে করছেন, এই জিডিপি হ্রাসের অন্যতম কারণ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এবং তা রুখতে টানা ৬৮ দিনের লকডাউন।
কিন্তু কর্মসংস্থানের ভয়াবহ পরিসংখ্যান উঠে এসেছিল করোনা সংক্রমণের আগেই। ওই সময় কেন্দ্রের পরিসংখ্যানেই দেখা গিয়েছিল দেশে কর্মসংস্থানের হার ৪৫ বছরে সর্বনিম্ন। অথচ ২০১৪ সালে প্রথম বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে নরেন্দ্র মোদীর প্রতিশ্রুতি ছিল ২ কোটি চাকরি। এ নিয়ে বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে সরকারকে। রাহুল গাঁধী এ দিন সেই বিষয়টিই ফের তুলে ধরেছেন। করোনভাইরাসের জেরে সংগঠিত এবং অসংগঠিত উভয় ক্ষেত্রে প্রচুর মানুষ কাজ হারিয়েছেন। ১২ কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছেন বলে রাহুল এ দিন টুইটে উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: বাদল অধিবেশনে সরকারকে কোনও প্রশ্ন নয়! গর্জে উঠল বিরোধী শিবির
করোনাভাইরাসের জেরে জিএসটি আদায় বিপুল ভাবে কমে গিয়েছে। কিন্তু সেই জিএসটির ঘাটতি কেন্দ্রকে পূরণ করতে হবে বলে রাজ্যগুলি এবং বিশেষ করে অবিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা সরব হয়েছেন। রাহুলের ‘বিপর্যয়’-এর তালিকায় সেই বিষয়টি রয়েছে। এ ছাড়া দেশে প্রায় প্রতিদিন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন সেই বিষয়টিও তুলে ধরে রাহুল বলেছেন, ‘‘রাজ্যগুলির বকেয়া জিএসটি দিচ্ছে না কেন্দ্র।’’
আরও পড়ুন: লাদাখে ফের অনুপ্রবেশের চেষ্টা চিনের, বৈঠকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী
গালওয়ান উপত্যকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত-চিন সেনা সংঘর্ষের পর দু’পক্ষের আলোচনায় কিছুটা স্থিতাবস্থা ফিরেছিল। কিন্তু গত ২৯-৩০ অগস্ট রাতে ফের আগ্রাসনের চেষ্টা চালিয়েছে চিনা বাহিনী। ফলে নতুন করে এই ইস্যুতে সরকারকে চেপে ধরার চেষ্টা করছে কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা। তা নিয়ে কিছুটা চাপে কেন্দ্র। ‘দেশের সীমান্তে বহিরাগতদের আগ্রাসন’— বলে উল্লেখ করে সরকারের অস্বস্তি আরও কিছুটা বাড়াতে চেয়েছেন রাহুলও।