সাংহাই কো-অপারেশন বৈঠকে আমন্ত্রিত পাকিস্তান। ফাইল চিত্র।
কূটনৈতিক বিধি মেনেই সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)-এর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্তরের বৈঠকে পাকিস্তানকে আমন্ত্রণ জানাল নরেন্দ্র মোদী সরকার। আগামী ২৯ মার্চ নয়াদিল্লিতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা স্তরের বৈঠক হবে। ২৭ এপ্রিল হবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনা। ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে দিল্লিতে এই জোড়া বৈঠকে যোগে দিতে পারেন চিন, রাশিয়া-সহ অন্য সদস্য দেশগুলির প্রতিনিধিরা।
এসসিও-র বর্তমান চেয়ারম্যান হিসাবে ভারত এই দু’টি বৈঠকের আয়োজন করছে। তবে আমন্ত্রণ পেলেও কোনও পাক প্রতিনিধি এসসিওর জোড়া বৈঠকে যোগ দেবেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। সম্প্রতি, নয়াদিল্লিতে এসসিও দেশগুলির প্রধান বিচারপতিদের বৈঠকে পাক প্রধান বিচারপতি উমর অটা বন্দিয়াল হাজির হননি। ভার্চুয়াল বৈঠকে সে দেশের সুপ্রিম কোর্টের এক বিচারপতি অংশ নিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, এসসিওর ৮টি সদস্যরাষ্ট্রে পৃথিবীর মোট ৪০ শতাংশ জনসংখ্যার বাস। পৃথিবীর মোট ৩০ শতাংশ জিডিপি এই দেশগুলির নিয়ন্ত্রণে। নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ৩টি দেশ, কিরঘিজস্তান, কাজাখস্তান এবং তাজিকিস্তানকে সঙ্গে নিয়ে চিন একটি নতুন জোট গড়েছিল। ওই দেশগুলির সঙ্গে চিনের প্রায় ৩,৫০০ কিলোমিটারের সীমান্ত রয়েছে। কূটনৈতিক মহলের একাংশের মতে প্রাথমিক ভাবে চিনের লক্ষ্য ছিল মধ্য এশিয়ার ওই নতুন দেশগুলিতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা ও ইসলামি কট্টরপন্থার প্রসার প্রতিরোধ। পরে নিজের শিনজিয়াং প্রদেশের আন্দোলন দমনে মুসলিম প্রধান ৩ দেশের আপত্তি এড়ানো এবং ওই অঞ্চলে মজুত প্রাকৃতিক সম্পদও বেজিংয়ের ‘লক্ষ্য’ হয়ে দাঁড়ায়।
এই প্রেক্ষাপটে ১৯৯৬ সালে শান্তি ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ও ব্যবসাবাণিজ্য বাড়াতে চিন, রাশিয়া, কাজাখস্তান, কিরঘিজস্তান ও তাজিকিস্তান যৌথ ভাবে ‘সাংহাই ফাইভ’ গড়ে তোলে। ২০০১-এ উজবেকিস্তান এই জোটে যোগ দেয় এবং সংস্থাটির নাম বদলে হয় সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)। ২০১৫-য় মূলত মস্কোর উদ্যোগে ভারত এই প্রভাবশালী আঞ্চলিক রাষ্ট্রগোষ্ঠীর সদস্য হতে পারলেও, নয়াদিল্লিকে চাপে রাখতে চিন একই সঙ্গে পাকিস্তানকে ওই সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত করেছিল।