সলমন রুশদি। ফাইল ছবি।
লেখক সলমন রুশদির উপর হামলার ঘটনার নিন্দা করল ভারত। ঘটনার ১৩ দিন পর প্রথম প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে লেখকের দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হয়েছে।
গত ১২ অগস্ট, নিউ ইয়র্কে একটি সাহিত্যসভায় রুশদির উপর হামলার ঘটনা ঘটে। সে দিন মঞ্চেই লুটিয়ে পড়েছিলেন বুকারজয়ী লেখক। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। দেওয়া হয়েছিল ভেন্টিলেশনে। ওই ঘটনার পর কেটে গিয়েছে ১৩ দিন। জন্মসূত্রে ভারতীয় সলমনের উপর হামলা প্রসঙ্গে এত দিন কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি ভারত। বৃহস্পতিবার ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বলেছেন, ‘‘ভারত বরাবরই হিংসা ও কট্টরপন্থার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। আমরা সলমন রুশদির উপর এই ভয়ঙ্কর হামলার নিন্দা করছি। কামনা করছি তাঁর দ্রুত সুস্থতারও।’’
রুশদির উপর হামলা হয়েছিল নিউ ইয়র্ক থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরের একটি জায়গায়। মঞ্চে বক্তৃতা করতে যাবেন, সেই সময়েই হামলা চালানো হয় রুশদির উপর। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, মঞ্চে ওঠার সময় বুকারজয়ী লেখক রুশদির উপর ছুরি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন এক হামলাকারী। মুহূর্তের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ বার ছুরির কোপ বসানো হয় লেখকের ঘাড়ে-বুকে-পেটে। মঞ্চেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। পুলিশ রুশদিকে হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে পাঠায়। গ্রেফতার করা হয় ২৪ বছর বয়সি হামলাকারী হাদি মাতারকে। আপাতত পুলিশ হেফাজতেই রয়েছেন অভিযুক্ত।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, রুশদির উপর হামলার নিন্দা করতে প্রায় দু’সপ্তাহ সময় কেন নিল ভারত? একই সঙ্গে কারও কারও প্রশ্ন, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে তাঁর লেখা বই ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সাস’কে কি নিষিদ্ধ তালিকা থেকে বাদ দেওয়া যেত না? রুশদির উপর হামলার পরই যে প্রশ্ন তুলেছিলেন চিত্রপরিচালক অপর্ণা সেন। তিনি টুইটারে লেখেন, ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সাসের লেখককে কংগ্রেস সরকার তোষণনীতির জন্য যে অসাংবিধানিক ভাবে নিষিদ্ধ করেছিল, তার আমি নিন্দা করি। আমি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আর্জি জানাব, স্বাধীনতার ৭৫ বছরে আমাদের সংবিধানের সম্মান রক্ষার্থে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হোক।’
যদিও সেই আর্জি সরকারের তরফে মেনে নেওয়ার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ফলে, ভারত যে দিন আনুষ্ঠানিক ভাবে হামলার নিন্দা করে রুশদির সুস্থতা কামনা করল, সে দিন আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল সেই প্রশ্নটিই।