হোশিয়ার সিংহ।
চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হল জাতীয় স্তরের এক খেলোয়াড়ের। তবে তাঁর পরিবারের অভিযোগ, নিছক দুর্ঘটনা নয়। ট্রেন থেকে তাঁকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছিল দুই রেল পুলিশ।
জিআরপি অবশ্য পরিবারের দাবি মানতে নারাজ। প্রাথমিক তদন্তে তাদের দাবি, ‘‘দুর্ঘটনা। আর কোনও কারণ নেই।’’ যদিও ওই দুই পুলিশের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে, জানান আগরার এসপি (রেল) গোপেশ খন্না।
গত কাল মা, স্ত্রী ও দশ মাসের সন্তানকে নিয়ে কাসগঞ্জ থেকে মথুরায় নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন জাতীয় স্তরে ফেন্সিং চ্যাম্পিয়ন হোশিয়ার সিংহ। মা-বৌকে মহিলা কামরায় তুলে দিয়ে নিজে ওঠেন সাধারণ কামরায়। পুলিশের বক্তব্য, মাঝপথে সিকান্দ্রা স্টেশনে জল কিনতে নেমেছিলেন হোশিয়ার। কিন্তু দেরি হয়ে যায়। ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে দেখে দৌড়ে উঠতে যান তিনি। তাতেই পা ফস্কে পড়ে যান ট্রেন ও প্ল্যাটফর্মের মাঝখানে।
পুলিশের আরও বক্তব্য, যদি ওই যুবককে ধাক্কা মেরেই ফেলে দেওয়া হতো, তা হলে তিনি প্ল্যাটফর্মে পড়ে যেতেন। ওই জায়গায় পড়ে যেতেন না। ‘‘বরং পুলিশ তাকে সাবধান করেছিলেন। ইমার্জেন্সি ব্রেকও কষেছিলেন সঙ্গে সঙ্গে,’’ বলেন এসপি খন্না।
যদিও হোশিয়ার সিংহের পরিবার পুলিশের সমস্ত দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছে। তাদের দাবি, নিজেদের পিঠ বাঁচাতে গোটা ঘটনায় রং চড়িয়েছে পুলিশ। হোশিয়ারের ভাই মুনেশকুমার জানান, কাসগঞ্জে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন তাঁরা। ফেরার সময় কাসগঞ্জ-মথুরা প্যাসেঞ্জার ট্রেনে ওঠেন। তিনি বলেন, ‘‘দাদা সাধারণ কামরায় ছিল। মায়েরা ছিল মহিলা কামরায়। হঠাৎই বৌদির শরীরটা খারাপ হয়। মা ফোন করে দাদাকে জানায়।’’ এর পরই সিকান্দ্রা স্টেশনে নেমে মহিলা কামরায় উঠতে যান হোশিয়ার। বাধা দেন ওই দুই জিআরপি কর্মী। মুনেশ বলেন, ‘‘দাদা ওদের কাছে অনুরোধ করেছিল। বৌদির অসুস্থতার কথাও জানিয়েছিল। কিন্তু ওরা সে সব মানতে চাইছিল না। উল্টে ২০০ টাকা ঘুষ চায়। দাদা প্রতিবাদ করে।’’
ওই যুবকের মা শশীবালা দেবী বলেন, ‘‘ছেলে শেষমেশ ওদের দাবি মিটিয়ে দিতে যাচ্ছিল। কিন্তু ট্রেন ছেড়ে দেয়। তখনই ওরা ওঁকে ধাক্কা মেরে ট্রেন থেকে ফেলে দেয়। ট্রেন আর প্ল্যাটফর্মের মাঝখানে আটকে পড়ে আমার ছেলেটা।’’
রেল প্রতিমন্ত্রী মনোজ সিন্হা জানিয়েছেন, তদন্তের জন্য বিশেষজ্ঞ দলকে পাঠানো হয়েছে ঘটনাস্থলে। রিপোর্ট হাতে এলে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।