তথ্য পাচার? ৩ চিনা সাংবাদিককে দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে দিল্লি

বেজিংয়ের সঙ্গে স্নায়ুযুদ্ধ বাড়িয়ে তিন চিনা সাংবাদিককে ভারত ছেড়ে চলে যেতে বলল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। চিনের সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া-র ওই তিন সাংবাদিককে এ মাসের মধ্যেই দেশে ফিরে যেতে বলা হয়েছে।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৬ ০৩:০৩
Share:

বেজিংয়ের সঙ্গে স্নায়ুযুদ্ধ বাড়িয়ে তিন চিনা সাংবাদিককে ভারত ছেড়ে চলে যেতে বলল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। চিনের সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া-র ওই তিন সাংবাদিককে এ মাসের মধ্যেই দেশে ফিরে যেতে বলা হয়েছে।

Advertisement

সূত্রের খবর, সপ্তাহ খানেক ধরেই বিষয়টি নিয়ে চাপ তৈরি হচ্ছিল। চিনা সাংবাদিকরা বিষয়টি বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে জানালেও ফল হয়নি। তবে কী কারণে তাঁদের দেশ ছাড়তে বলা হচ্ছে, তা বলেনি নয়াদিল্লি। গোয়েন্দা সূত্রের বক্তব্য, দেশের কোনও গোপন তথ্য যাতে চিন পেতে না পারে, তার জন্য আগাম এই সতর্কতা।

পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের সীমান্তে চিন-পাকিস্তান যৌথ সেনা মহড়া, পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠী বা এনএসজি-তে ভারতের সদস্যপদের বিরোধিতা করা, দক্ষিণ চিন সাগরে ভারতের জাহাজ চলাচলে আপত্তি করার মতো বিষয় নিয়ে চিনের সঙ্গে উত্তেজনা যখন তুঙ্গে, তখন এই ধরনের পদক্ষেপ খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। যে তিন জন সাংবাদিককে চলে যেতে বলা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে উ কিয়াং এবং তাং লি সিনহুয়ার দিল্লি ও মুম্বইয়ের ব্যুরো চিফ। তৃতীয় জন শি ইয়ংগাং-ও সিনহুয়ার মুম্বই অফিসে কর্মরত। উ ভারতে কাজ করছেন সাত বছর। ২০১৫ থেকে বাকি দু’জন মুম্বইয়ে কাজ করছেন। সিনহুয়া সংবাদ সংস্থাটি সরকারি, সরাসরি যার দায়িত্বে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী লি খ্যচিয়াং। এই সাংবাদিকদের ভিসার মেয়াদ চলতি বছরের গোড়াতেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বিদেশ মন্ত্রক তখন তাঁদের অপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়ে আশ্বস্ত করে— শীঘ্রই ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হবে। সেই সময় তাঁদের পাসপোর্ট ফিরিয়ে দিয়ে বলা হয়, শহরের বাইরে না যেতে। কিন্তু ১৪ জুলাই তাঁদের জানানো হয়— ভিসার মেয়াদ আর বাড়ানো হবে না, তাঁরা যেন দেশে ফিরে যান।

Advertisement

এই মুহূর্তে ভারতের পাঁচ জন সাংবাদিক চিনের বেজিংয়ে কাজ করছেন। চিনের তিন সরকারি ইংরেজি সংবাদমাধ্যম চায়না সেন্ট্রাল টেলিভিশন, চায়না ডেলি এবং চায়না রেডিও ইন্টারন্যাশনালে বেশ কিছু ভারতীয় সাংবাদিক কাজ করেন। এ ছাড়া চিন সরকারের ফেলোশিপ নিয়ে দু’জন ভারতীয় সাংবাদিক এই মুহূর্তে চিনে রয়েছেন। তাঁদের উপর কোনও চাপ আসে কি না, সেটাই এখন দেখার। তবে কোনও ভারতীয় সাংবাদিককে চিন থেকে বহিষ্কারের নজির নেই। মাস ছয়েক আগে সরকারি নীতির সমালোচনা করে লেখার কারণে এক ফরাসি সাংবাদিককে দেশে পাঠিয়ে দিয়েছে বেজিং।

কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ অবশ্য ভারতের এই সিদ্ধান্তকে কট্টর এবং অদূরদর্শী বলে বর্ণনা করছেন। কারণ এনএসজি-র সদস্যপদের জন্য চিনের অনুমোদন ভারতের কাছে অত্যন্ত জরুরি। দু’দিন আগেই বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ লোকসভায় বলেছিলেন, ‘‘কোনও দেশ কোনও বিষয়ে আজ আপত্তি করছে মানে চিরকালই আপত্তি করে যাবে, এমন নয়। এনএসজি নিয়ে চিনের সঙ্গে আলোচনা চলছে।’’ সেই সময়ে বিদেশ মন্ত্রকের এমন একটি সিদ্ধান্ত অকারণ উত্তেজনা সঞ্চার করতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement