ফাইল চিত্র।
পশ্চিম, পূর্ব এবং মধ্য— ভারত এবং চিন সীমান্তের এই তিনটি সেক্টরকে পৃথক ভাবে আলোচনার টেবিলে নিয়ে এসে এক এক করে জট ছাড়াতে আগ্রহী বেজিং। ভারত চায়, এক সঙ্গে গোটা সীমান্ত নিয়েই আলোচনা এবং সমাধান সূত্র তৈরি করা হোক।
দিল্লিতে ভারত এবং চিনের মধ্যে বিশেষ প্রতিনিধি স্তরের দু’দিনের সীমান্ত বৈঠক সোমবার শেষ হয়েছে। সূত্রের খবর, চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র তরফ থেকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়। দু’দেশের সেনার মধ্যে সীমান্তে হটলাইন তৈরির কথাও হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, চিনের এই প্রস্তাবে সায় দেয়নি নয়াদিল্লি। আরও সময় নিয়ে ভাবার কথাই বলা হয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্রের মতে, চিনের এমন প্রায় কোনও প্রতিবেশী নেই, যাদের সঙ্গে তাদের সীমান্ত নিয়ে বিরোধ নেই। ভারতের সঙ্গে রয়েছে। ১৯৬২ সালে যুদ্ধেও জড়িয়েছিল ভারত ও চিন। সূত্রের বক্তব্য, পূর্ব সেক্টর অর্থাৎ অরুণাচল প্রদেশ,
মধ্য সেক্টর অর্থাৎ উত্তরাখণ্ড এবং পশ্চিম সেক্টর অর্থাৎ লাদাখ নিয়ে আলাদা আলাদা করে আলোচনা করলে বেজিংয়ের লাভ। ভূখণ্ডের অধিকার নিয়ে দর কষাকষি তীক্ষ্ণ করতে সুবিধা হয়। অরুণাচল প্রদেশকে পৃথক ভাবে আলোচনা করে নজরের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসাটাই বেজিংয়ের লক্ষ্য বলে মনে করা হচ্ছে।।
সীমান্ত বৈঠকের পাশাপাশি চিনের বিদেশমন্ত্রী এই সফরে দেখা করেছেন উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডুর সঙ্গেও। তার পরেই চিনা বিদেশ মন্ত্রকের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০০৫ সালে দু’দেশের মধ্যে তৈরি হওয়া সীমান্ত সমস্যা মেটাতে নির্দেশিকার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ একটি ‘ফ্রেমওয়ার্ক’-এর খসড়া ভারতকে দেওয়া হবে।
কূটনৈতিক শিবিরের মতে, ডোকলামে হাত পোড়ানোর পরে টনক নড়েছিল মোদী সরকারের। লিপুলেখ পাসের কাছে কালাপানি এলাকায় চিনের গতিবিধি এবং পরিকাঠামো নির্মাণ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সাউথ ব্লকের কাছে গোয়েন্দা রিপোর্ট এসেছিল। ঘটনা হলো, এক সঙ্গে গোটা সীমান্ত নিয়ে আলোচনায় না-বসে সমস্যার পৃথক-পৃথক ক্ষেত্রকে চিহ্নিত করে সমাধানসূত্র খোঁজার প্রস্তাবটি ছ’মাস আগেই দিয়েছিল চিন। কিন্তু তখনও ভারত তাতে গুরুত্ব দেয়নি।