অজিত ডোভাল। ফাইল চিত্র।
নতুন বোতলে পুরনো মদ। ভারত-চিন সীমান্ত-জট ছাড়াতে দু’দেশের সীমান্ত সমস্যা মেটানোর পুরনো পদ্ধতিটিই আবার কার্যকরী করা হল। চিন সীমান্ত সংক্রান্ত ‘বিশেষ প্রতিনিধি’ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল আজ কথা বললেন চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই দু’জনই ‘দ্বিপাক্ষিক সীমান্ত মেকানিজমের’ বিশেষ প্রতিনিধি। কিন্তু এর আগে তাঁরা সব সময়েই কথা বলেছেন শান্তির বাতাবরণে। মে থেকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি)-য় অশান্তি শুরু হওয়ার পরে এই প্রথম সেই পুরনো মেকানিজমটিকে কাজে লাগানো হল।
আজ এক দিকে সেনা সূত্রে দাবি করা হয়েছে, গালওয়ান উপত্যকায় চিনা সেনারা যেখানে ছিল সেখান থেকে পিছু হঠতে শুরু করেছে। পাশাপাশি ফোনে ডোভালের সঙ্গে ওয়াং ই-র কথোপকথনের পরে বিদেশ মন্ত্রক একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘ওঁরা (ডোভাল এবং ওয়াং) একমত হয়েছেন যে এলএসি থেকে সম্পূর্ণ সেনা সরানো নিশ্চিত করতে হবে। ভারত-চিন সীমান্তে পুরোপুরি শান্তি ও সুস্থিতি ফিরিয়ে আনতে হবে। দু’টি দেশই এলএসি থেকে সেনা সরানোর কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে রাজি হয়েছে।’ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তবের বক্তব্য, ‘ভারত-চিন সীমান্ত থেকে যাতে ধাপে ধাপে সেনা পিছু হটে, দু’টি দেশকেই তা নিশ্চিত করতে হবে। তাঁরা ফের জানিয়েছেন যে দু’টি দেশই যাতে এলএসি কঠোর ভাবে মান্য করে, তা নিশ্চিত করতে হবে। কোনও দেশ একতরফা ভাবে পদক্ষেপ করলে স্থিতাবস্থা বিঘ্নিত হবে।’
আরও পড়ুন: ডোভালের ফোনে অগ্রগতি, প্রশ্ন রেখেই সেনা সরাল ভারত-চিন
বৈঠকের পরে চিনও একটি বিবৃতি দিয়েছে। কিন্তু তাতে উত্তেজনা প্রশমন ও সেনার সংখ্যা কমানোর বদলে শুধুই সেনাদের এলএসি থেকে পিছিয়ে যাওয়ায় সহমতির কথা বলা হয়েছে। এলএসি-তে একতরফা পদক্ষেপে স্থিতাবস্থা বিঘ্নিত হওয়ার যে আশঙ্কা ভারতের বিবৃতিতে রয়েছে, তা-ও চিনের বিবৃতিটিতে নেই।
কূটনৈতিক শিবিরে প্রশ্ন উঠেছে দু’দেশের বিদেশমন্ত্রী যখন কথা বলছিলেন, তখন ডোভালকে আনা হল কেন? বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর শুধু মন্ত্রী নন, এক জন চিন বিশেষজ্ঞ শীর্ষ কূটনীতিকও। সরকারি সূত্রে অবশ্য বলা হচ্ছে, এর মধ্যে রাজনীতি নেই। দীর্ঘদিন ধরে ডোভাল এবং ওয়াং সীমান্ত নিয়ে কথা বলছেন, ফলে তাঁদের মধ্যে কাজের সম্পর্ক ভাল। অন্য কূটনৈতিক চ্যানেলগুলি যে বন্ধ করে দেওয়া হল, বিষয়টি তা-ও নয়। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, দুই বিশেষ প্রতিনিধি একমত হয়েছেন যে কূটনৈতিক এবং সামরিক কর্তারা তাঁদের কথাবার্তা চালিয়ে যাবেন। তার মধ্যে ডব্লিউএমসিসি-র মেকানিজমটিও থাকবে।