ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের সঙ্গে আলাপচারিতায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার জার্মানির মিউনিখে। ছবি: পিটিআই
উন্নতির জন্য, স্বপ্ন ও স্বপ্নপূরণের জন্য ভারত উদগ্রীব— জার্মানি সফরে গিয়ে সেখানে বসবাসকারী ভারতীয়দের সভায় আজ এ কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, শিল্প বিপ্লবের চতুর্থ পর্যায়ের একেবারে পুরোভাগে রয়েছে ভারত। যদিও প্রধানমন্ত্রীর এই দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা এবং বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের প্রশ্ন, দেশের অর্থনীতির যা হাল, তাতে শিল্প বিপ্লবের চতুর্থ পর্যায়ে ভারতের নেতৃত্ব দেওয়া আদৌ সম্ভব!
গত আট বছরে তাঁর জমানায় ভারতের কতটা অগ্রগতি হয়েছে, বিদেশ সফরে গিয়ে তার ঢাক পেটাতে কখনওই কসুর করেন না প্রধানমন্ত্রী। জার্মানিতে প্রবাসী ভারতীয়দের সভায়ও তার ব্যতিক্রম হল না। দাবি করলেন, ভারতে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ইকোসিস্টেম রয়েছে। মোবাইল ফোন নির্মাণের ক্ষেত্রে ভারত দ্বিতীয় বৃহত্তম। মোদী বলেন, ‘‘নতুন ভারত আজ শিল্প বিপ্লবের চতুর্থ পর্যায়ে একেবারে পুরোভাগে রয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি হোক বা ডিজিটাল প্রযুক্তি— ভারত সর্বক্ষেত্রেই উজ্জ্বল।’’ একটা সময় পরাধীন থাকার কারণে শিল্প বিপ্লবের কোনও সুবিধা ভারত নিতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘গত শতাব্দীতে জার্মানি ও অন্য কয়েকটি দেশ শিল্প বিপ্লবের সুফল পেয়েছে। কিন্তু ভারত পরাধীন থাকার জন্য সেই সুফল থেকে বঞ্চিত থেকেছে। আজ আর ভারত পিছিয়ে নেই। শিল্প বিপ্লবের চতুর্থ পর্যায়ের নেতৃত্ব দেবে।’’ মোদীর দাবি, ভারতের যুব সমাজ শিক্ষিত। তারা ‘নতুন ভারত’ গড়ে তুলেছে।
‘শিল্প বিপ্লবের নেতৃত্ব’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যে দাবি করেছেন, তা নিয়ে সরব বিরোধীরা। তাঁদের প্রশ্ন, দেশের অর্থনীতি কার্যত বেহাল। বিনিয়োগ প্রায় নেই বললেই চলে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার বাড়ানোয় বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুদ বাড়বে। মোদী জমানায় বেকারত্ব সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। দেশের অবস্থা যখন এই রকম, তখন বিদেশে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্বে দেওয়ার দাবি কতটা যুক্তিসঙ্গত। একই প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের মতে, বিনিয়োগ না থাকলে শিল্প আসবে কোথা থেকে?
শিল্পের অগ্রগতির দাবির পাশাপাশি, করোনা মোকাবিলা নিয়েও তাঁর সরকারের সাফল্যের দাবি করেছেন মোদী। জানিয়েছেন, দেশের ৯০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক টিকার দু’টি ডোজ় নিয়েছেন এবং ৯৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক অন্তত একটি ডোজ় পেয়েছেন।