ছবি: সংগৃহীত।
নিজেকে বিষ্ণুর দশম অবতার বলেই মনে করেন এই স্বঘোষিত ধর্মগুরু। তাই তিনি ‘কল্কি ভগবান’। এ বার সেই কল্কির বিভিন্ন বাড়ি ও সংস্থায় তল্লাশি চালিয়ে হিসেব বহির্ভূত প্রায় ৪০৯ কোটি টাকা উদ্ধার করল আয়কর দফতর।
বুধবার থেকে অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ুর ৪০টি আলাদা আলাদা জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে আয়কর দফতর। আয়কর কর্তারা জানান, সেগুলির মালিক ৭০ বছরের ‘কল্কি ভগবান’ ও তাঁর ছেলে কৃষ্ণ। চেন্নাই, হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু, চিতোর ছাড়াও তামিলনাড়ু এবং অন্ধ্রপ্রদেশে কল্কির প্রতিটি আশ্রমে চলছে তল্লাশি।
জীবনবিমা নিগমের প্রাক্তন কর্মী বিজয় কুমার ১৯৮০ সালে ‘জীবাশ্রম’ বলে একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করেন। সেই শুরু। সে বছরেরই মাঝামাঝি চিতোরে নিজের একটি বিশ্ববিদ্যলয়ও খুলে ফেলেন তিনি। ১৯৯০ সাল থেকে নিজেকে বিষ্ণুর অবতার বলে পরিচয় দিতে থাকেন বিজয় কুমার। এমনকি নিজেকে ‘কল্কি ভগবান’ বলে ঘোষনাও করেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী পদ্মাবতী ও ছেলে কৃষ্ণা। তাঁরা কল্কির সংস্থার অছি-ও বটে।
সেখান থেকে ক্রমশ জমি-বাড়ির ব্যবসা, নির্মাণ ব্যবসা, খেলাধুলোর ব্যবসার মতো নানা দিকে ছড়িয়ে পড়েন স্বঘোষিত এই ধর্মগুরু। শুধু দেশে নয়, বিদেশেও। পাশাপাশি ধর্মীয় দর্শন ও সুস্থ থাকার বিষয়ে নানা কোর্সও চালাতেন কল্কির সংস্থা। নানা আবাসন এলাকায় সেগুলি আয়োজন করা হত, যাতে আগ্রহী হতেন বহু বিদেশিও। যার জেরে প্রচুর বিদেশি মুদ্রায় আয় করত কল্কির ওই সংস্থা। তবে সে সব কোনও কিছুরই চালান কাটা হত না। আর এ ভাবে আয়কর ফাঁকি দিয়ে প্রচুর সম্পত্তি বাড়িয়েছিলেন কল্কি।
আয়কর দফতর জানিয়েছে, দেশ-বিদেশ থেকে আসা অনুদানের চালানও চেপে রেখেছিল কল্কির সংস্থা। তল্লাশিতে আশ্রম থেকে তেমন প্রচুর প্রমাণ পেয়েছে আয়কর দফতর। নানা জায়গা-জমি বেচেও প্রচুর কালো টাকা জমিয়েছিল সংস্থাটি।
উদ্ধার হওয়া হিসেব বহির্ভূত অর্থের মধ্যে মোট ৯৩ কোটি মিলেছে নগদে। যার মধ্যে ৪৩ কোটি ভারতীয় মুদ্রায়, বাকিটা বিদেশি মুদ্রায় উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি মিলেছে ৮৮ কেজি সোনা যার বর্তমান বাজারে দাম প্রায় ২৬ কোটি টাকা। মিলেছে ৫ কোটি টাকা দামের ১২৭১ ক্যারাট হিরেও। বুধবার থেকে শুরু হওয়া ওই তল্লাশি অভিযান এখনও চলছে।