রশিদ খান। —ফাইল চিত্র।
তালিবান শাসনে আফগানিস্তানে মেয়েদের খেলাধুলো নিষিদ্ধ। শাসকের ভয় দেশ ছেড়েছেন সে দেশের অধিকাংশ মহিলা ক্রিকেটার। বিদেশে অনুশীলনের মধ্যে থাকলেও আফগানিস্তানের হয়ে খেলার সুযোগ নেই তাঁদের। সে দেশের অন্যতম সেরা মহিলা ক্রিকেটার ফিরোজ়া আমিরির দাবি, সুযোগ পেলে তাঁরাও সাফল্য পেতে পারেন পুরুষ ক্রিকেটারদের মতো। তাঁদের খেলার সুযোগ করে দিতে রশিদ খানদের মুখ খোলার আর্জি জানিয়েছেন আমিরি।
আমিরি বলেছেন, ‘‘আমাদের ছেলেদের দল বিশ্ব ক্রিকেটে এখন বেশ ভাল জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে। ওরা আমাদের পাশে দাঁড়ালে আমরাও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাফল্য পেতে পারি। আমাদের মহিলাদের জন্য ওদের সমর্থন ভীষণ সহায়ক হতে পারে। মেয়েরা খেলাধুলো করতে পারলে, পড়াশুনো করতে পারলে নতুন সুযোগ তৈরি হবে।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘পুরুষ ক্রিকেটারদের সমর্থন পেলে আফগানিস্তানের মেয়েদের সামনে নতুন দিগন্ত খুলে যেতে পারে। আমার আবেদন শুনতে পেলে এখনই জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের উচিত মেয়েদের জন্য মুখ খোলা। আপনারা দয়া করে দেশের মহিলাদের কন্ঠস্বর হয়ে উঠুন। আমাদের মতো মহিলাদের জন্য কিছু করার কথা ভাবুন। ওরা এখন দেশের সবচেয়ে বিখ্যাত মানুষ। ওরাই পারে মেয়েদের জন্য কথা বলতে।’’
মহিলাদের খেলোধুলো নিষিদ্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মহলেও নানা সমস্যায় পড়তে হয় আফগানিস্তানকে। রশিদদের বিরুদ্ধে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ় খেলে না অস্ট্রেলিয়া। লিঙ্গ বৈষম্যের প্রতিবাদে আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে না খেলার দাবি উঠেছে ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকাতেও। আফগান মহিলা ক্রিকেটারদের সাহায্য করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। আগামী ৩০ জানুয়ারি মেলবোর্নে মহিলাদের অ্যাশেজ় সিরিজ়ের দিন-রাতের টেস্টের আগে একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের আয়োজন করা হয়েছে আফগানিস্তানের মহিলা ক্রিকেটারদের জন্য।
আমিরি মনে করেন বিদেশের মাটিতে এই ধরনের উদ্যোগ আফগানিস্তানের ক্রিকেট বোর্ডের উপর চাপ তৈরি করতে পারে। তিনি বলেছেন, ‘‘এই ধরনের ম্যাচে সাফল্য পেলে আমরা আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের উপর চাপ তৈরি করতে পারি। মহিলাদের দল তৈরি করার কথা বলতে পারি। তবে আমরা সবচেয়ে খুশি হব আবার ক্রিকেট খেলতে পারলে।’’ আমিরি মেনে নিয়েছেন চাইলেও হয়তো রশিদেরা তাঁদের জন্য মুখ খুলতে পারবেন না। তাঁদেরও ভয় রয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘‘জানি আমাদের পুরুষ ক্রিকেটারদের জন্য কাজটা সহজ নয়। অনেকের পরিবারই আফগানিস্তানে বসবাস করে। আমরা চাই না আমাদের জন্য কেউ বিপদে পড়ুক।’’
মহিলা ক্রিকেটারদের জন্য রহমানুল্লাহ গুরবাজ়, মহম্মদ নবিদের সরব হওয়া অনিশ্চিত। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাফল্য পেলেও তাঁদেরও থাকতে হয় তালিবান শাসনের মধ্যেই। শাসকের রোষে পড়লে অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে তাঁদের ক্রিকেটজীবনও। আমিরি চান, জাতীয় দলের যে ক্রিকেটারেরা পরিবার নিয়ে পাকাপাকি ভাবে বিদেশে বসবাস করেন, তাঁরা অন্তত মুখ খুলুন।