ফাইল ছবি
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী জোটের তরফে কাকে প্রার্থী করা হবে, তা নিয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে কংগ্রেসের সঙ্গে আঞ্চলিক দলগুলির আলোচনাই শুরু হয়নি। তার আগেই তাঁদের ‘কোনও মতাদর্শ নেই’ মন্তব্যে ক্ষুব্ধ আঞ্চলিক দলের নেতারা। তৃণমূল কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি (আপ) আগে থেকেই চেষ্টা শুরু করেছিল যাতে কংগ্রেসের কোনও নেতানেত্রীকে বিরোধী জোটের প্রার্থী করা না হয়। রাহুল গান্ধীর মন্তব্যের পরে কংগ্রেসের নেতাদের একাংশের আশঙ্কা, রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি), ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) থেকে শিবসেনা, এনসিপি-র মতো কংগ্রেসের শরিক দলও একই রাস্তায় হাঁটতে পারে। তাঁরাও দাবি তুলতে পারে, কংগ্রেসের কাউকে প্রার্থী না করে অন্য কোনও দলের বা অরাজনৈতিক কোনও ব্যক্তিত্বকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী জোটের প্রার্থী করা হোক।
রবিবার উদয়পুরে কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরের শেষ দিনে রাহুল বলেছিলেন, ‘‘একমাত্র কংগ্রেসই বিজেপি-আরএসএসের মোকাবিলা করতে পারবে। কোনও আঞ্চলিক দল পারবে না। কারণ আঞ্চলিক দলগুলির কোনও মতাদর্শ নেই।’’ এর পরেই তৃণমূল থেকে জেডিএস, আরজেডি থেকে জেএমএম, ন্যাশনাল কনফারেন্স থেকে সিপিএমের মতো দলগুলি কংগ্রেসকে নিশানা করেছে। তৃণমূল বলেছে, কংগ্রেসের আর সেই জমিদারি নেই। জেডিএসের বক্তব্য, কংগ্রেস আঞ্চলিক দলগুলিকে নিয়ে আতঙ্কিত। আরজেডি-র বক্তব্য, নেতৃত্বের বদলে কংগ্রেস আঞ্চলিক দলের সঙ্গে সহযাত্রী হিসাবে চলতে শিখুক। জেএমএম মনে করিয়ে দিয়েছে, ঝাড়খণ্ড, বিহারে কংগ্রেস আঞ্চলিক দলের উপরেই নির্ভরশীল।
এই প্রেক্ষিতে কংগ্রেসের অন্দরে প্রশ্ন উঠেছে, রাষ্ট্রপতি ভোটে কি আঞ্চলিক দলের নেতানেত্রীদের পাশে পাওয়া যাবে? জুলাইয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। বিজেপি নেতারা মনে করছেন, বিজেপির নিজের সাংসদ, বিধায়ক সংখ্যা এবং শরিক, বন্ধু দলগুলির সাহায্য নিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থী জিতিয়ে আনতে সমস্যা হবে না। কাকে রাষ্ট্রপতি করা হবে, সেটাই শুধু প্রশ্ন।
রাজনীতিবিদেরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, পাঁচ বছর আগে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কংগ্রেস মীরা কুমারকে প্রার্থী করেছিল। তিনি হেরে গেলেও বিপুল ভোট পেয়েছিলেন। কারণ তৃণমূলের মতো আঞ্চলিক দলগুলি তো বটেই, মায়াবতীও মীরাকে সমর্থন জানান। এ বার সেই রকম সমর্থন মেলার আশা নেই। উল্টে বিজেপি কোনও দলিত মহিলাকে প্রার্থী করলে বিজেপি বিরোধী দলও তাঁকে সমর্থন করতে পারে। কংগ্রেসের এক প্রবীণ নেতার মতে, সেই ক্ষেত্রে আঞ্চলিক দলগুলিই নিজেদের কোনও প্রার্থী খাড়া করলে কংগ্রেসকেই বাধ্য হয়ে তাঁকে সমর্থন করতে হতে পারে। কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরে যে সমস্ত সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত হয়েছে, আজ তা রূপায়ণের জন্য দিল্লিতে এআইসিসি-র বৈঠক বসে। আগামীকালও সেই বৈঠক হবে।