Farmers

পঞ্জাবে কৃষকদের হাতে নিগৃহীত বিজেপি বিধায়ক, বেধড়ক মারধরের পর ছিঁড়ে নেওয়া হল জামাও

কেন্দ্রের কৃষি আইনের সমর্থনে সাংবাদিক বৈঠক করতে যাচ্ছিলেন ওই নেতা। সেই সময় উত্তেজিত মানুষের ভিড় তাঁর উপর চড়াও হয়।।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

চণ্ডীগঢ় শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২১ ০৯:৫৩
Share:

নিগৃহীত বিধায়ককে উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: ভিডিয়ো গ্র্যাব।

পঞ্জাবে আন্দোলনকারী কৃষকদের বিরুদ্ধে বিজেপি বিধায়ককে নিগ্রহের অভিযোগ উঠল। পুলিশ জানিয়েছে, কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইনের সমর্থনে সাংবাদিক বৈঠকে যাওয়ার সময় উত্তেজিত মানুষের ভিড় ওই নেতাকে ঘিরে ধরে। ওই নেতা এবং তাঁর সঙ্গীদের লক্ষ্য করে প্রথমে কালি ছোড়া হয়। কোনও রকমে ভিড় কাটিয়ে স্থানীয় একটি দোকানে সকলকে ঢুকিয়ে দেয় পুলিশ। কিছু ক্ষণ পর পরিস্থিতি শান্ত হয়ে গিয়েছে ভেবে দোকান থেকে বেরিয়ে আসেন তাঁরা। মুহূর্তের মধ্যে তাঁদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে উত্তেজিত জনতা। কিল, চড়, ঘুষি উড়ে আসতে থাকে ভিড়ের মধ্যে থেকে। ওই নেতার পরনের জামা ছিঁড়ে দেওয়া হয়। উত্তেজিত ভিড়ের মধ্যে থেকে পুলিশ ওই নেতাকে কোনওমতে উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যায়।

Advertisement

শনিবার পঞ্জাবের মুক্তসর জেলার মলোটে এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে নেটমাধ্যমেও। নিগৃহীত ওই বিজেপি নেতার নাম অরুণ নারং। অবোহারের বিধায়ক তিনি। মলোটে বিজেপি-র দলীয় কার্যালয়ে কৃষি আইনের সমর্থনে একটি সাংবাদিক বৈঠক করার কথা ছিল তাঁর। সেখানে তাঁর আসার খবর পেয়ে ভিড় করেন সাধারণ মানুষ এবং কৃষি আইনের বিরুদ্ধে পথে নামা একদল কৃষক। পরিস্থিতি বেগতিক হতে পারে বুঝে তড়িঘড়ি অরুণকে দলীয় কার্যালয় থেকে বার করে নিয়ে যেতে উদ্যত হয় পুলিশ। কিন্তু উত্তেজিত ভিড় কার্যত ওই বিধায়ককে তাড়া করতে শুরু করে বলে অভিযোগ। যে দোকানের ভিতর ওই নেতাকে ঢুকিয়ে ভিতর থেকে তালাবন্ধ করে দেওয়া হয়, সেই দোকানেও ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ পুলিশের।

মালোট পুলিশের ডেপুটি সুপার জসপাল সিংহ বলেন, ‘‘ওই বিজেপি নেতাকে কিছুতেই সাংবাদিক বৈঠক করতে দেবেন না বলে জেদ ধরে বসেছিলেন আন্দোলনকারীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে আমাদের এক কর্মীও চোট পেয়েছেন।’’ ঘটনার পর সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অরুণ বলেন, ‘‘এলোপাথাড়ি ঘুষি মারা হয় আমাকে। জামা কাপড়ও ছিঁড়ে দেওয়া হয়।’’ এ নিয়ে তিনি নিজে এখনও থানায় অভিযোগ জানাননি। দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে পুলিশ অজ্ঞাতপরিচয় আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ৩০৭ (খুনের চেষ্টা)-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়েপর করেছে। হামলাকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

Advertisement

এই গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করা হয় পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহের দফতর থেকে। টুইটারে লেখা হয়, ‘অবোহারের বিজেপি বিধায়কের উপর এই হামলার তীব্র নিন্দা করছেন মুখ্যমন্ত্রী। যে-ই হোন না কেন, রাজ্যের শান্তি বিনষ্ট করলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। এই ধরনের অশান্তি যাতে আরও মাথাচাড়া না দেয়, তার জন্য কৃষি আইন নিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমাধানসূত্র বার করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আর্জি জানাচ্ছেন তিনি’।

ঘটনার নিন্দা করেন সংযুক্ত কিসান মোর্চার নেতা দর্শন পালও। বিগত কয়েক মাস ধরে যাঁর নেতৃত্বে কৃষক আন্দোলন চলে আসছে। তিনি বলেন, ‘‘অবোহারের বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন কৃষকরা। বিক্ষোভের হিংসাত্মক আকার ধারণ করা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বিষয়। এক জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করা উচিত হয়নি। এই ধরনের আচরণে একেবারেই সমর্থন নেই আমাদের। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি।’’ আন্দোলনকারীদের শান্তিপূর্ণ ভাবে, শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে আন্দোলন চালানোর আর্জি জানান তিনি। কংগ্রেস, শিরোমণি অকালি দল এবং বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও এই ঘটনার সমালোচনা করেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement