লোকসভায় সরকারি চাকরির হিসেব দিতে গিয়ে কর্মসংস্থানের ভয়াবহ পরিস্থিতির ছবিটিই বুধবার তুলে ধরল নরেন্দ্র মোদী সরকার।
লোকসভায় এক জন সদস্যের প্রশ্নের উত্তরে কর্মিবর্গ দফতরের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ জানিয়েছেন, ২০১৪ থেকে ২০২২ পর্যন্ত সরকারের নানা কর্মখালি বিজ্ঞাপনের জবাবে ২২.০৫ কোটি যুবক-যুবতী বিভিন্ন সরকারি পদের জন্য আবেদন করেছিলেন। নিয়োগ সংস্থাগুলি এঁদের মধ্য থেকে বাছাই করে কর্মসংস্থানের জন্য সুপারিশ করে পাঠিয়েছে মাত্র ৭ লক্ষ ২২ হাজার ৩১১ জনের নাম। তাদের মধ্যে কত জনের নিয়োগ হয়েছে, সুনির্দিষ্ট ভাবে জবাব দেননি প্রতিমন্ত্রী। তবে এই ৭ লক্ষ ২২ হাজার জনের সকলের চাকরি হয়েছে ধরে নেওয়া হলেও, প্রধানমন্ত্রী তথা শাসক দলের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অঙ্কের তুলনায় এই সংখ্যা নেহাতই নগন্য।
বিজেপির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল ফি বছর ২ কোটি চাকরি দেবে তারা। গোটা দেশ ঘুরে প্রধানমন্ত্রী মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহেরা এই স্বপ্ন ফেরি করে ভোট আদায় করেছেন। সেই হিসেবে ২০১৮ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ৮ বছরে চাকরিপ্রাপকের সংখ্যা হওয়া উচিত ১৬ কোটি। হয়েছে ৭ লক্ষ ২২ হাজার।
লোকসভায় জিতেন্দ্র সিংহের দেওয়া হিসেবে দেখা যাচ্ছে, ৮ বছরের মধ্যে সব চেয়ে বেশি নিয়োগের সুপারিশ হয়েছে ২০১৯-২০ সালে, অর্থাৎ যে বছরে দেশে লোকসভার নির্বাচন হয়েছে। এই বছরে নিয়োগকারী সংস্থাগুলির সুপারিশ এসেছিল ১,৪৭,০৯৬ জনের নামের। লক্ষ্যণীয় ভাবে তার আগের বছর ২০১৮-২৯-এ এই অঙ্কটি ছিল মাত্র ৩৮,১০০। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে সংখ্যাটি খানিক বেড়ে দাঁড়ায় ৭৮,৫৫৫-এ। সদ্য শেষ হওয়া অর্থবছর ২০২১-২২-এ নিয়োগের জন্য সুপারিশের সংখ্যা ফের কমে দাঁড়িয়েছে ৩৮,৮৫০-এ।
লোকসভায় প্রতিমন্ত্রীর দাবি, যুবসমাজকে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ এবং কর্মসংস্থানের উপযোগী করে তুলতে মোদী সরকার বহু প্রকল্প রূপায়ণ করছে। এর পরে তিনি সেই সব প্রকল্প এবং তা রূপায়ণে কত খরচ হয়েছে লোকসভায় বলে যান। এই সব প্রকল্পের ‘সাফল্যেই’ যে এই ৭ লক্ষ যুব প্রার্থীর কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে, লোকসভায় সেই দাবিও করেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী।