প্রতীকী ছবি।
বিবাহ এবং বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ককে একই মাপকাঠিতে বিচার করা যায় না বলে দিল্লি হাই কোর্টে দায়ের করা মামলার শুনানিতে দাবি করল আবেদনকারী পক্ষ। বিবাহিত সম্পর্কের ক্ষেত্রে কেবল মাত্র সম্মতির উপর নির্ভর করে ভারতীয় দণ্ডবিধির ধর্ষণের ধারা প্রয়োগ করা অসাংবিধানিক বলে দাবি করা হয়েছে আবেদনকারী সংগঠন ‘মেল ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট’-এর তরফে।
বিচারপতি রাজীব শাকধরের বেঞ্চে ওই শুনানি-পর্বে আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী জে সাই দীপক বলেন, ‘‘স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যে যৌন সম্পর্কে সম্মতির বিষয়টিকে অ-বৈবাহিক সম্পর্কের সঙ্গে একই মাপকাঠিতে বিচার করা যায় না। বিবাহিত সম্পর্কের ক্ষেত্রে যৌনতায় সম্মতির বিষয়টি আলাদা ভাবে বিবেচনা করাই উচিত নয়।’’ বিভিন্ন দেশের আদালতে বৈবাহিক এবং অবৈবাহিক সম্পর্কেক পৃথক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করা হয় বলেও দাবি করেন তিনি।
সাম্প্রতিক কালে বৈবাহিক ধর্ষণ সংক্রান্ত একাধিক মামলার শুনানি হয়েছে দিল্লি হাই কোর্টে। সম্প্রতি বিচারপতি হরি শঙ্কর এমনই একটি মামলার শুনানিতে তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেছিলেন, ‘‘আমাদের বুঝতে হবে বিবাহিত এবং বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্কের একটি মূলগত পার্থক্য রয়েছে।’’ স্ত্রীর সম্মতির বিরুদ্ধে স্বামী যৌন সম্পর্ক করলে তা ‘ধর্ষণ’ হিসেবে গণ্য করে ফৌজদারি মামলা দায়েক হবে কি না, সে সংক্রান্ত বিষয়ে তাঁর পর্যবেক্ষণ ছিল, ‘এই বিষয়টি ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ নম্বর ধারা (ধর্ষণ)-র একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যতিক্রম।
প্রসঙ্গত, কয়েক বছর আগেই কেন্দ্রীয় সরকার দিল্লি হাই কোর্টে হলফনামা জামা দিয়ে জানিয়েছিল, স্বামী যদি স্ত্রীর সম্মতির বিরুদ্ধে যৌন সম্পর্কে স্থাপনে বাধ্য করেন, তবে তা ধর্ষণের অপরাধ বলে চিহ্নিত করা উচিত নয়। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রের যুক্তি, সে ক্ষেত্রে বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানেই অস্থিরতা তৈরি হবে। সেই যুক্তির বিরোধিতা করে আইনজীবী কলিন গঞ্জালভেস বলেছিলেন, ‘‘বৈবাহিক সম্পর্কে ধর্ষণই মেয়েদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের সবচেয়ে বড় উদাহরণ।’’