আইআইটি খড়্গপুর থেকে পাশ করা ইঞ্জিনিয়ার। ঝুলিতে রয়েছে বিদেশি ডিগ্রিও। আমেরিকার নামী সংস্থায় চাকরি করতেন। কিন্তু সেই চাকরিতেও মন লাগছিল না। শেষে চাকরি ছেড়ে গরু কিনে দুধ বেচে উপার্জন শুরু করলেন তিনি।
তিনি কিশোর ইন্দুকুরি। আমেরিকার লোভনীয় চাকরি ছেড়ে শেষে কিনা তিনি গরু কিনে দুধ বেচে উপার্জন করছেন! কথাটা শুনতে বড় অদ্ভুত লাগে বৈকি। তা বলে তাঁর দূরদৃষ্টিকে হেলাফেলা করা যাবে না।
জানেন কি গরু কিনে দুধ বেচেই আজ তাঁর বছরে আয় ৪৪ কোটি টাকা!
কিশোরের জন্ম হায়দরাবাদে। ছোটবেলা সেখানেই কেটেছে তাঁর। তার পর আইআইটি খড়্গপুর থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে চলে যান আমেরিকা।
ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০১ সালে স্নাতকোত্তর এবং ২০০৫ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
২০০৫ সালেই এরিয়া কোঅর্ডিনেটর এবং সিনিয়র প্রসেস ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে আমেরিকার ইনটেল সংস্থায় কাজে যোগ দেন।
২০০৫ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত এই সংস্থাতেই কাজ করে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু মোটা মাইনের এই চাকরিতে কিছুতেই মন বসাতে পারছিলেন না।
২০১২ সালে চাকরি ছেড়ে দিয়ে দেশে ফিরে আসেন তিনি। কিশোর তখনও জানতেন না দেশে ফিরে ঠিক কী করতে চলেছেন তিনি।
হায়দরাবাদে ফেরার পর একটি বিষয় কিশোরের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সেখানে গরুর খাঁটি দুধের খুব আকাল।
সেই থেকেই দুধের ব্যবসা করার মনস্থির করে ফেলেন তিনি। এক জন বিদেশি ডিগ্রিধারী ইঞ্জিনিয়ার গরু কিনে দুধ বেচবেন তা জানতে পেরে পাড়া-প্রতিবেশীরা ঠাট্টা করতে শুরু করেন।
তবে সে সবে পাত্তা দেননি কিশোর। বরং পরিবারকে পাশে নিয়ে সঞ্চিত অর্থে প্রথমে ২০টি গরু কেনেন তিনি। তাঁরা নিজেরাই দুধ দুইয়ে তা বেচতে শুরু করেন।
২০১২ সালে হায়দরাবাদেই ছেলের নামে এক সংস্থা গড়ে তোলেন কিশোর।
৬ বছরের মধ্যে তাঁর গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়ায় ৬ হাজার। আরও গরু কিনে আস্তে আস্তে আরও বড় তোলেন ফার্ম।
এখন ১০ হাজার পরিবার তাঁর ফার্ম থেকে গরুর দুধ কেনেন। তাঁর অধীনে ১২০ জন কর্মচারী কাজ করেন। তাঁর ব্যবসায় টার্নওভার বছরে ৪৪ কোটি টাকা!