ঝড়বৃষ্টি-তুষারপাতে বিপর্যস্ত হিমাচলে ট্রেকিং করতে গিয়ে আটকে পড়েছিলেন ৪৫ জন আইআইটি পড়ুয়া। সোমবার থেকে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না তাঁদের সঙ্গে। মঙ্গলবার রাতে জেলা প্রশাসন ও বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন (বিআরও)-র যৌথ অভিযানে উদ্ধার করা হল উত্তরাখণ্ডের ওই দলটিকে। তাঁদের সঙ্গেই উদ্ধার করা হয়েছে দুই জার্মান পর্যটক ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত পাঁচ মার্কিন নাগরিককেও।
এ দিন দুপুরেই মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর জানিয়েছিলেন, খোঁজ মিলেছে পড়ুয়াদের। সুস্থই আছেন সকলে। কেলঙের জেলাশাসক অমর নেগি জানান, বরফ পড়ে রোটাং পাস এবং ওই এলাকার বেশ কিছু রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যার জন্যই রুরকি আইআইটি-র ৪৫ জন পড়ুয়া-সহ ট্রেক করতে আসা প্রায় ৩০০ জন লাহুল-স্পিতিতে আটকে পড়েছিলেন। বিকেলের দিকে, বায়ুসেনার বিমান নামিয়ে আকাশপথে উদ্ধার করা
হয় তাঁদের।
তবে এখনও খোঁজ নেই দিল্লি ও শিমলা থেকে ট্রেক করতে আসা আরও ৬ জনের। প্রত্যেকেরই বয়স সাতাশের নীচে। শিমলার দোদরা কওয়র তহসিলের জাখা থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন তাঁরা। কিন্নর জেলার সাংলায় পৌঁছনোর কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু শনিবারের পর থেকে তাঁদের আর খোঁজ মেলেনি। একটি সূত্রের দাবি, কলকাতার ৯ গবেষক ও মান্ডি আইআইটির ৫ পড়ুয়ার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে সে খবরের সত্যতা সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এত দিন হিমাচলে গিয়ে পর্যটকেরা বরফের জন্য হাপিত্যেশ করে থাকতেন। এখন সেখানেই আতঙ্কের ছায়া ফেলছে অসময়ের তুষারপাত। তবে বুধবার থেকে পরিস্থিতি কিছুটা ভাল হতে পারে বলে আশা করছেন আবহবিদেরা।
মানালিতেও গত তিন দিন ধরে আটকে পড়া পর্যটকেরা সোমবার বিকেলের পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশা করছিলেন। তখনই আবার বৃষ্টি শুরু হয়। মঙ্গলবার
সকাল থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছে মানালি থেকে রোটাঙের রাস্তাও। মানালিতে হোটেল চালানো কলকাতার অঞ্জন দাস আজ জানিয়েছেন, সোমবার সারা রাত বৃষ্টি হয়েছে। সঙ্গে পড়েছে বরফও। রবিবার সপরিবার মানালিতে পৌঁছন নিউ ব্যারাকপুরের বাসিন্দা, ব্যবসায়ী রাজা দত্ত। সোমবার বিকেল পর্যন্ত ঘুরেওছেন তাঁরা। মঙ্গলবার সকালে রোটাঙ যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আবহাওয়ার কারণে তা বাতিল করতে হয়েছে। কুলু থেকে মানালির যে প্রধান সড়ক, সেটা এখন পুরোপুরি বন্ধ বলে জানান অঞ্জনবাবু। তবে মঙ্গলবার তিনি জেনেছেন, মানালি থেকে নগর ঘুরে কুলু যাওয়ার দ্বিতীয় যে রাস্তা, সেটি দিয়ে গাড়ি চলছে। তাঁর কথায়, ‘‘মানালিতে এখন প্রচুর পর্যটক। এই সময়টা মরসুম নয়। তা-ও এত ভিড়। তবে মানালিতে খাবার, জল, বিদ্যুৎ নিয়ে কোনও সমস্যা নেই।’’