ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে কর্মীদের পদোন্নতিও করতেন সাধুর নির্দেশে! ফাইল ছবি।
যা করেন হিমালয়ের সাধু করেন। তিনি নিমিত্ত মাত্র। উচ্চপদস্থ কর্তার নিয়োগ থেকে কর্মীদের পদোন্নতি, সবই নাকি হিমালয়ের সাধু ‘শিরোমণি’-র নির্দেশে করতেন বলে বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি-কে জানিয়েছিলেন ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ বা এনএসই প্রাক্তন এমডি-সিইও চিত্রা রামকৃষ্ণ। এ বার প্রকাশ্যে এল সেই ‘সাধু’র সঙ্গে চিত্রার মেল। চিঠিতে হিমালয়ের সাধু চিত্রাকে নিয়ে সমুদ্রস্নানে যাওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন। দিয়েছেন বিভিন্ন রকম ভাবে চুল বাঁধার পরামর্শ।
২০১৩ থেকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে এনএসই-র এমডি-সিইও থাকাকালীন চিত্রার বিরুদ্ধে একাধিক আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। ইতিমধ্যেই তাঁকে তিন কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ বার এই মামলায় চিত্রার বাড়িতে গিয়ে টানা ১২ ঘণ্টা জেরা করল সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, গত ২০ বছর ধরে বছর ষাটের চিত্রা তাঁর ব্যক্তিগত থেকে পেশাগত, সব বিষয়ে হিমালয়ের ওই সাধুর পরামর্শ নিতেন। কার পদোন্নতি হওয়া উচিত, কার নয়— সব বিষয়ে সাধুর কথাতেই চলেছেন তিনি। তাঁরা দেখা করতেন ‘পবিত্র স্থানে’। সেবি জানতে পারে, ২০১৫ সালে একাধিক বার সাধুর সঙ্গে দেখা করেছেন চিত্রা। পাওয়া গিয়েছে একটি ই-মেল আইডি। যা সাধুর বলে জানিয়েছেন চিত্রা নিজেই।
তা কোথায় থাকেন এই সাধু? চিত্রার দাবি, শিরোমণির আবাসস্থল হিমালয় হলেও তাঁর নির্দিষ্ট ঠিকানা নেই। যেখানে খুশি ‘প্রকট’ হতে পারেন তিনি। কোনও প্রয়োজন হলে ই-মেলে যোগাযোগ করতেন তাঁরা।
যে মেল আইডি সাধুর বলে দাবি করেছেন চিত্রা, সেখান থেকে একাধিক মেল এসেছে তাঁর কাছে। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, চিত্রাকে ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি একটি মেল করা হয়। ওই চিঠিতে প্রেরক লিখেছেন, পরের মাসে সিসিলি যাওয়ার জন্য বাক্স-প্যাঁটরা বেঁধে তৈরি হচ্ছেন তিনি। চিঠিতে চিত্রাকে লেখা হয়, ‘তোমার সাহায্যের প্রয়োজন হলে জানিও। সাঁতার জানলে আমরা সিসিলিতে সমুদ্রস্নান উপভোগ করতে পারি। তার পর সৈকতে কিছুটা জিরিয়ে নেব। আমি আমার ট্যুর অপারেটরকে বলছি কাঞ্চনের সঙ্গে যোগাযোগ করে তোমার টিকিটের বন্দোবস্ত করতে।’ কে এই কাঞ্চন তা জানার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
২০১৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি চিত্রাকে ওই একই আইডি থেকে আরও একটি মেল করা হয়। তাতে লেখা, ‘আজ তোমায় ভারি সুন্দর দেখাচ্ছে। বিভিন্ন রকম ভাবে চুল বাঁধবে তুমি। তাতে তোমায় আরও সুন্দর ও আবেদনময়ী লাগবে। এটা একটা বিনামূল্যের পরামর্শ। জানি তুমি মানবে। পারলে মার্চের মাঝামাঝি ফাঁকা থেকো।’ এনএসই-র প্রাক্তন শীর্ষকর্তা চিত্রার দাবি এটা সেই সাধুর মেল আইডি। যদি তাই হয় কেন এ ধরনের চিঠি দিতেন তাঁকে! তদন্ত চলছে।