কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর। —ফাইল চিত্র
রাহুল গাঁধী কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর থেকেই কংগ্রেসে কার্যত নেতৃত্ব সঙ্কট। সনিয়া গাঁধী হাল ধরলেও তিনি অন্তর্বর্তিকালীন সভানেত্রী। ন’মাস কেটে যাওয়ার পরেও পূর্ণ সময়ের সভাপতির চেয়ারে কাউকে বসাতে পারলেন না কংগ্রেস নেতৃত্ব। এ নিয়েই ক্ষোভ প্রকাশ করলেন দলের বর্ষীয়ান নেতা শশী তারুর। অবিলম্বে এই নেতৃত্ব সঙ্কট মেটানো উচিত, বললেন তিরুঅনন্তপুরমের সাংসদ। রাহুল দায়িত্ব না নিলে প্রিয়ঙ্কা গাঁধীই যে স্বাভাবিক বিকল্প, সে কথাও বলেছেন তারুর।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শশী বলেন, কংগ্রেস প্রধান হিসেবে দায়িত্বে ফিরে আসবেন কি না, সেটা রাহুলেরই ঠিক করা উচিত। কিন্তু তিনি যদি তাঁর আগের অবস্থান থেকে সরে না আসেন, তাহলে দলের উচিত এক জন সক্রিয় ও পূর্ণ সময়ের নেতা নির্বাচন করা।
তা হলে বিকল্প কি প্রিয়ঙ্কা গাঁধী? তিনি কারও পক্ষে বা বিপক্ষে নন জানিয়ে তারুরের জবাব, ‘‘আমি নিশ্চিত যে বিষয়টি নিয়ে যখন আলোচনা হবে, তখন প্রিয়ঙ্কার নাম উঠবে। প্রিয়ঙ্কার একটা স্বভাবসিদ্ধ ক্যারিশ্মা আছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। ওঁর নিজের মতামতকেও গুরুত্ব দিতে হবে।’’
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ বড়াই জিইয়ে রাখতে ফের বন্ধু হয়ে উঠতে পারেন মোদী
দলের এই নেতৃত্ব যে আম জনতার কাছে ইতিবাচক বার্তা নয়, তাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তারুর। তাঁর মতে, ‘‘শাসক দলের বিভাজনের নীতির বিরুদ্ধে এখনও কংগ্রেসই নির্ভরযোগ্য জাতীয় বিকল্প। কিন্তু আমাদের অনেকের কাছেই বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে নেতৃত্বের প্রশ্ন। কারণ সাধারণ মানুষের মনে এই ধারণা ক্রমেই বদ্ধমূল হচ্ছে যে, কংগ্রেস ডুবন্ত দল।’’
গত লোকসভা ভোটে বিপুল ভরাডুবি হলেও সারা দেশে এখনও বিরোধী শক্তি হিসেবে কংগ্রেসই সামনের সারিতে। কিন্তু কার্যত নেতৃত্বহীনতার কারণেই যে অনেক দলীয় কর্মী-সমর্থকও অন্য দলের প্রতি ঝুঁকে পড়ছেন, তার জ্বলন্ত উদাহরণ সাম্প্রতিক দিল্লির বিধানসভা নির্বাচন— মনে করেন তারুর। উল্লেখ্য ২০১৫ সালে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে একটিও আসন পায়নি কংগ্রেস। এ হাত খালি। বরং প্রাপ্ত ভোটের হার অনেক কমে গিয়েছে। তারুর বলেন, ‘‘এই সব কারণে অবিলম্বে নেতৃত্বের সঙ্কট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো দরকার। সাধারণ মানুষ ও সংবাদ মাধ্যমের মনোভাবও পরিবর্তন হচ্ছে। সংবাদ মাধ্যমও আমাদের সমালোচনা করছে।’’
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের সফরের আগেই বিপত্তি, হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল মোতেরা স্টেডিয়ামের দু’টি অস্থায়ী তোরণ
২০১৯ সালে সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরে পরেই দলের সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন রাহুল গাঁধী। তার পর দলের বহু নেতা-নেত্রী, এমনকি সনিয়া গাঁধী ও প্রিয়ঙ্কাও তাঁকে বুঝিয়ে আর ওই পদে ফেরাতে পারেননি। অবশেষে বাধ্য হয়ে সনিয়া গাঁধীকেই অন্তর্বর্তিকালীন সভাপতি নির্বাচন করে দল। সেই সঙ্কট কাটিয়ে দলের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য অবিলম্বে পূর্ণ সময়ের সভাপতি নির্বাচনের উপরেই জোর দিয়েছেন শশী তারুর।