কুয়েতে বায়ুসেনার সেই বিশেষ বিমান। ছবি: এক্স (সাবেক টুইটার)।
কুয়েতের বহুতল আবাসনে আগুন লাগার ঘটনায় হত ৪৫ জন ভারতীয়ের দেহ ফিরিয়ে নিয়ে আসা হল দেশে। শুক্রবার ভোরে বায়ুসেনার একটি বিমান কুয়েত থেকে কেরলের উদ্দেশে রওনা দেয়। সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ বিমানটির কোচি বিমানবন্দরে অবতরণ করে। তার পর বিমানটির দিল্লির উদ্দেশে যাওয়ার কথা। বিমানে রয়েছেন কেন্দ্রীয় বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিংহও।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, নিহত ভারতীয় শ্রমিকদের মধ্যে অধিকাংশই কেরল এবং দক্ষিণ ভারতের অন্য রাজ্যগুলির বাসিন্দা। তাই বিমান প্রথমে কোচি বিমানবন্দরে অবতরণ করে। যে সকল নিহত শ্রমিকের বাড়ি উত্তর এবং পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে, তাঁদের দেহ নিয়ে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেবে বিমানটি। বিমানবন্দরেই রাখা হয়েছে কিছু শববাহী অ্যাম্বুল্যান্স।
কুয়েতের ভারতীয় দূতাবাসের তরফে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লেখা হয়, “বায়ুসেনার বিশেষ বিমানে কুয়েতের অগ্নিকাণ্ডে হত ৪৫ ভারতীয়দের দেহ কোচি বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিংহ, যিনি কুয়েত প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে দেহ ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, তিনিও এই বিমানে রয়েছেন।”
কুয়েত প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, তারা ৪৫ জন ভারতীয়ের দেহ শনাক্ত করতে পেরেছে। নিহতদের মধ্যে তিন জন ফিলিপিন্সের বাসিন্দা। দেহগুলির অধিকাংশই আগুনের গ্রাসে অর্ধদগ্ধ হয়ে গিয়েছিল। নিহতদের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হতে ডিএনএ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয় কাতার প্রশাসন। ভারতীয় দূতাবাসের তরফে জানানো হয়েছে, নিহত ভারতীয়দের মধ্যে ২৩ জন কেরল, সাত জন তামিলনা়ড়ু, তিন জন উত্তরপ্রদেশ, দু’জন ওড়িশা এবং এক জন করে বিহার, পঞ্জাব, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড, হরিয়ানা এবং পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা।
বুধবার ভোরে কুয়েতের রাজধানী শহরের দক্ষিণে মাঙ্গাফ এলাকার একটি বহুতল আবাসনে আগুন লাগে। জানা যায়, ওই আবাসনে মূলত থাকেন শ্রমিকেরা, যাঁদের অধিকাংশই ভারতীয়। প্রথমে জানা গিয়েছিল, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয় ৪৯। হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় প্রায় ৫০ জনকে। তবে কী কারণে আগুন লাগল, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। কুয়েতের কিছু স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, গ্যাস লিক হওয়ার কারণেই এই বিপর্যয়। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, শর্ট সার্কিট থেকেই এই অগ্নিকাণ্ড। কুয়েত প্রশাসন সূত্রে খবর, আবাসনটির একতলায় প্রায় দু’ডজন গ্যাস সিলিন্ডার মজুত করা ছিল। শ্রমিকদের ঘরগুলির মাঝে ছিল কার্ডবোর্ড। দাহ্যবস্তু থাকার ফলেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে ফলে বলে মনে করা কুয়েতের আমির শেখ মেশাল আল-আহমেদ আল-জাবের আলজ-সাবাহ্ এই নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্তে অগ্রগতির জন্য কুয়েতের স্থানীয় প্রশাসন হোটেলটির মালিককে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছে।