হ্যাকার সেজে বাবাকে হুমকি মেসেজ ছেলের। প্রতীকী ছবি।
হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা যায় কী ভাবে, ইউটিউব দেখে শিখেছিল বছর তেরোর ছেলেটি। আর সেই হ্যাকিংয়ের কাজ শুরু করে তার বাবার হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক করেই! ঘটনাটি রাজস্থানের জয়পুরের।
হঠাৎই এক দিন হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পান কিশোরের বাবা। অশ্লীল গালিগালাজে ভর্তি সেই মেসেজ। অচেনা নম্বর থেকে এ রকম মেসেজ পেয়ে একটু ঘাবড়ে যান ওই ব্যক্তি। তবে খুব একটা গুরুত্ব দেননি। উত্তর না দিয়েই মেসেজ মুছে দেন। উত্তর না পেয়ে ফের ওই নম্বর থেকে আবার মেসেজ আসে। এ বার আরও অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করা হয়। সঙ্গে ধমক দিয়ে বলা হয়, ‘তোর গার্লফ্রেন্ড আছে তো? ভেবেছিস কী, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানব না! সব জানি। তোর বাড়ির আশপাশেই আমার লোক লাগানো আছে। তোর উপর নজর রাখছে।’
দ্বিতীয় বার এ রকম অদ্ভুত মেসেজ পেয়ে বিষয়টিকে হালকা ভাবে নেননি ওই ব্যক্তি। পুলিশকে বিষয়টি জানান। থানায় অভিযোগ দায়ের করার পরই আবার মেসেজ আসে— ‘পুলিশের কাছে গিয়েছিলিস তো, পুলিশেরও ক্ষমতা নেই আমাকে ধরার! ওখানেও আমার লোক আছে। তোর ঘর থেকে শুরু করে সব জায়গায় আমার লোক আছে।’
এর পরই ওই ব্যক্তি সাইবার বিশেষজ্ঞদের দ্বারস্থ হন। ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ যে মোবাইল থেকে পাঠানো হচ্ছিল তার আইপি অ্যাড্রেস চিহ্নিত করেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা খতিয়ে দেখার পর ওই ব্যক্তিকে জানান, এটি কোনও হ্যাকিংয়ের ঘটনা নয়। তাঁর ঘরেরই কেউ অন্য মোবাইল থেকে তাঁকে এই ধরনের মেসেজ পাঠাচ্ছে। ওই ব্যক্তি একটু চিন্তায় পড়ে যান। তবে বিশ্বাস করেননি যে, তাঁর ঘরেরই কেউ এ কাজ করছে।
যখন আসল সত্য প্রকাশ্যে আসে, তাঁর প্রায় জ্ঞান হারানোর মতো অবস্থা হয়। সাইবার বিশেষজ্ঞ মুকেশ চৌধুরী ওই ব্যক্তিকে জানান, এ কাজ তাঁর ছেলেই করেছে। তাকে যাতে বাড়ির লোকেরা সন্দেহ না করে, সে জন্য ঘরের বিভিন্ন জায়গায় ইয়ারফোন, কিছু ইলেকট্রনিক যন্ত্র লাগিয়ে রেখেছিল। যখন সে টের পায় যে, বাবা সাইবার বিশেষজ্ঞর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, ঘরে লাগানো যন্ত্রগুলি নিজেই বাবা-মাকে দেখিয়ে এটা প্রমাণ করতে চেয়েছিল যে, কেউ সত্যি সত্যিই তাঁদের উপর নজর রাখছে। আরও ঘাবড়ে যান ওই ব্যক্তি।
কিন্তু ধরা পড়তেই অন্য গল্প ফাঁদে ছেলেটি। সে বলে, “গেম খেলার সময় একটি লিঙ্কে ক্লিক করেছিল। আর ক্লিক করতেই হ্যাকাররা সব তথ্য হাতিয়ে নেয়। মা-বাবাকে খুন করার হুমকি দেয় হ্যাকাররা। এর পর এক মিউজিক শুনিয়েছিল হ্যাকাররা, যা শুনে সম্মোহিত হয়ে গিয়েছিলাম। তার পর হ্যাকাররা যে ভাবে নির্দেশ দিচ্ছিল, সে ভাবেই কাজ করছিলাম।” যদিও বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা বলেই দাবি করেছেন সাইবার বিশেষজ্ঞ।