(বাঁ দিকে) স্ত্রীর সঙ্গে হায়দরাবাদের সেই অভিযুক্ত। এই বাড়িতেই স্ত্রীকে খুন বলে অনুমান পুলিশের (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
স্ত্রীকে খুনের পর কুচিকুচি করে কেটেছেন। তার পর দেহাংশগুলি প্রেশার কুকারে সিদ্ধ করেছেন। ফেলে দিয়েছেন খালের জলে। পুলিশের কাছে গোটা ঘটনার বর্ণনা এবং খুনের স্বীকারোক্তির পরেও এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে গ্রেফতার করা হয়নি হায়দরাবাদের সেই প্রাক্তন সেনা জওয়ানকে। তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারীরা। তবে এখনও উদ্ধার করা যায়নি কোনও দেহাংশ। অভিযুক্তের বক্তব্যের সপক্ষে কোনও প্রমাণও মেলেনি বলে দাবি। সেই কারণেই এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে এই ঘটনায় কোনও গ্রেফতারি নেই।
হায়দরাবাদের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে বৃহস্পতিবার। অভিযুক্তের নাম গুরুমূর্তি। আগে সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত থাকলেও বর্তমানে তিনি নিরাপত্তারক্ষী হিসাবে কাজ করতেন। পুলিশকে জানান, তিনি ৩৫ বছর বয়সি স্ত্রী মাধবীকে খুন করেছেন। ঝগড়া চলাকালীন রাগের মাথায় দেওয়ালে স্ত্রীর মাথা ঠুকে দিয়েছিলেন তিনি। তাতে ঘটনাস্থলেই মহিলার মৃত্যু হয়। এর পর খুনের ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে রান্নাঘর থেকে ছুরি নিয়ে আসেন অভিযুক্ত। স্ত্রীর দেহ কেটে ফেলেন কুচিকুচি করে। তার পর পাঁচ থেকে ছ’ঘণ্টা ধরে প্রেশার কুকারে সেই হাড় এবং মাংস সিদ্ধ করেন। হামানদিস্তা দিয়ে হাড় গুঁড়োও করেন অভিযুক্ত।
পুলিশ জানতে পেরেছে, স্ত্রীর সিদ্ধ করা সেই মাংস এবং হাড়ের গুঁড়ো বিভিন্ন জায়গায় ফেলেছেন অভিযুক্ত। নিকটবর্তী একটি খালের জলেও সেগুলি ফেলা হয়েছে।
১৮ জানুয়ারি থেকে মহিলা নিখোঁজ ছিলেন। তাঁর মা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং তাঁর স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রথমে স্বীকার না-করলেও পরে খুনের কথা অভিযুক্ত স্বীকার করে নেন। পুলিশকে জানান প্রতিটি মুহূর্তের বিস্তারিত বিবরণ। তদন্তকারীরা এখনই তাঁর সব কথা বিশ্বাস করতে পারছেন না। কারণ, সেগুলির সপক্ষে প্রমাণ মেলেনি। যদিও উদ্ধার করা হয়েছে সেই ছুরি এবং প্রেশার কুকার। হায়দরাবাদের সিপি জি সুধীর বাবু বলেন, ‘‘আমরা শুধু দাবির উপর ভিত্তি করে এগোতে পারি না। সমস্ত প্রযুক্তিগত এবং বিজ্ঞানসম্মত তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের কাজ চলছে। তদন্ত চলছে।’’ ডেপুটি পুলিশ কমিশনার প্রবীণ কুমার বলেন, ‘‘এটা কোনও পূর্বপরিকল্পিত খুন নয়। এখনও পর্যন্ত আমরা যা পেয়েছি, তাতে রাগের মাথায় খুন বলেই মনে হচ্ছে। আমরা অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। এখনও কোনও দেহাংশ উদ্ধার করা হয়নি। আমাদের কাছে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ এখনও নেই।’’