— প্রতীকী ছবি।
বন্ধুর প্রেমে পড়ে লিঙ্গ পরিবর্তন করিয়ে ফেলেছিলেন। স্বপ্ন দেখতেন বাকি জীবনটা কাটাবেন একসঙ্গে, স্বামী-স্ত্রী হয়ে। কিন্তু সেই স্বামীই মত বদলালেন বিয়ের পরে। ফেলে চলে গেলেন। উত্তরপ্রদেশের কৌশাম্বীর ২২ বছরের ‘মহিলা’র অভিযোগে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। ‘স্বামী’, তাঁর বাবা এবং কাকার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের হয়েছে।
নিগৃহীতা মহিলা জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে পাশের পাড়ার এক যুবকের প্রেমে পড়েন তিনি। সম্পর্কে থাকাকালীনই যুবক তাঁকে লিঙ্গ পরিবর্তনের জন্য চাপ দিতেন। কিন্তু মহিলার দাবি, তিনি বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। সে জন্য লিঙ্গ বদলেও তিনি প্রস্তুত ছিলেন। যুবকটি এক সময় বিয়ে করতে রাজি হন এবং তাঁর সঙ্গী মহিলা হতে চেয়ে অস্ত্রোপচার করান।
বছর দু’য়েক আগে অস্ত্রোপচারের পর দু’জনে একটি মন্দিরে বিয়ে করেন। তার পর থেকে স্বামী-স্ত্রী হিসাবে থাকছিলেন। মহিলার দাবি, পারিবারিক এবং সামাজিক চাপ সত্ত্বেও তাঁরা একসঙ্গেই থাকবেন বলে স্বামী বার বার তাঁকে বলতেন। কিন্তু সংসার টিকল না বেশি দিন।
কৌশাম্বীর পুলিশ সুপার ব্রিজেশকুমার শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে লিঙ্গ পরিবর্তনের পর তাঁরা স্বামী, স্ত্রী হিসাবে থাকা শুরু করেন। অভিযুক্ত যুবক অভিযোগকারিণীকে কখনও ছেড়ে যাবেন না বলেও কথা দিয়েছিলেন একাধিক বার। কিন্তু সমস্যা শুরু হয় দু’তিন মাস আগে। স্ত্রীকে এড়িয়ে যেতে শুরু করেন স্বামী। তার পর কথা বন্ধ। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি স্ত্রীর ফোনও ধরতেন না। এর পরেই স্ত্রীর কাছে ফোন আসে অভিযুক্তের বাবা এবং কাকার। তাঁরা মুখ বন্ধ রাখার হুমকি দেন। বলেন, জানাজানি হলে খুন হয়ে যাবেন।
অভিযোগকারিণী বলছেন, ‘‘আমি লিঙ্গ পরিবর্তনের জন্য ৮ লক্ষ টাকা খরচ করেছি। আমি বহু বছর ধরে গান গেয়ে যে ৬ লক্ষ টাকা উপার্জন করেছিলাম, তা-ও নিয়ে নেওয়া হয়েছে।’’
এ দিকে পুলিশের দাবি, অভিযোগকারিণী রূপান্তরকামী। তিনি কখনওই লিঙ্গ পরিবর্তনের জন্য অস্ত্রোপচার করাননি। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘আমরা যখন অস্ত্রোপচারের নথি দেখতে চাই তখন তিনি কিছুই দেখাতে পারেননি। তার বদলে তিনি অজুহাত দিচ্ছিলেন। গোটা ব্যাপারটি মানবিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার পর পদক্ষেপের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।’’