আদিবাসী শ্রমিকের পা ধুয়ে দিচ্ছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান (বাঁ দিকে)। শ্রমিককে উপহার দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: টুইটার।
আদিবাসী শ্রমিকের মুখে-গায়ে প্রস্রাব করার ঘটনা নিয়ে গত তিন দিন ধরে উত্তাল মধ্যপ্রদেশ। রাজনীতিও সরগরম হয়ে উঠেছে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে। বিষয়টি নিয়ে নানা মহলে ক্রমাগত সুর চড়তে থাকায় অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রবেশ শুক্লর বিরুদ্ধে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা তো নিয়েইছে রাজ্য প্রশাসন। শুধু তাই-ই নয়, এই ঘটনায় সরকারের ভাবমূর্তিতে যাতে কোনও রকম আঁচড় না লাগে, তার জন্য খোদ মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ চৌহান আসরে নামেন।
আদিবাসী শ্রমিক দশমত রাওয়তের কাছে এই ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকি তাঁকে নিজের বাসভবনে ডেকে নিয়ে এসে হাত-পা ধুইয়ে দেন। পরিয়ে দেন উত্তরীয়। কিছু উপহার দেন। শুধু তাই-ই নয়, নিজের হাতে শিবরাজ খাইয়েও দেন দশমতকে। দশমতকে বাসভবনে ডেকে ‘অতিথি আপ্যায়নের’ গোটা ঘটনাটি নিজের টুইটার হ্যান্ডলেও শেয়ার করেছেন শিবরাজ।
এই ঘটনায় কিছুটা হতচকিত হয়ে গিয়েছিলেন দশমত। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর জুতো খুলতে যাওয়ায় দশমত ইতস্তত বোধ করেন। যদিও শিবরাজ জোর করেই জুতো খুলে নেন। তার পর দশমতকে বলেন, “ওই ঘটনার ভিডিয়ো দেখে অত্যন্ত ব্যথিত হয়েছিলাম। আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাইছি। আপনাদের মতো মানুষই আমার কাছে ঈশ্বর।”
তিন দিন আগে একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেন আনন্দবাজার অনলাইন। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, এক ব্যক্তি আদিবাসী এক শ্রমিকের মুখে, গায়ে প্রস্রাব করছেন। সেই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই মধ্যপ্রদেশে শোরগোল পড়ে যায়। অভিযুক্তের নাম প্রবেশ শুক্ল। গত ৪ জুলাই ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের সিধি জেলার কুবরি গ্রামে।
স্থানীয় বেশ কয়েকটি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, প্রবেশের বিজেপির সক্রিয় কর্মী। বিজেপি বিধায়ক কেদারনাথ শুক্লর ঘনিষ্ঠ। যদিও বিজেপি বিধায়ক প্রবেশের সঙ্গে যোগের কথা অস্বীকার করেছেন। প্রবেশের ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক এবং বিভিন্ন মহল সরব হওয়ায় তড়িঘড়ি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করে প্রশাসন। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এমনকি বুলডোজ়ার দিয়ে তাঁর বাড়ির একাংশ গুঁড়িয়েও দেওয়া হয়। প্রবেশের বাবা রমাকান্ত শুক্ল বলেন, তিনি বিজেপি বিধায়কের এক জন প্রতিনিধি। তাই তাঁকে ইচ্ছাকৃত ভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। তাঁর আরও সাফাই, “আমার ছেলে এ ধরনের কাজ করতে পারে না। ওঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হয়েছে।”