মণিপুর হিংসার একটি ছবি। —ফাইল চিত্র।
মণিপুরের চলমান হিংসা নিয়ে এ বার মুখ খুলল আমেরিকাও। প্রয়োজনে জাতিহিংসায় বিধ্বস্ত রাজ্যটির মানুষদের উদ্দেশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছে তারা। বৃহস্পতিবার ভারতে নিযুক্ত আমেরিকার রাষ্ট্রদূত এরিক গার্সেট্টি বলেন, “মণিপুরে আমরা যে কোনও সাহায্যের জন্য প্রস্তুত। আমি মনে করি এটা মানবিকতার প্রশ্ন।” এই প্রসঙ্গে তাঁর সংযোজন, “আমরা চাইছি দ্রুত শান্তি ফিরুক। সেখানে শান্তি ফিরলে আমরা আরও প্রকল্প, আরও বিনিয়োগ করতে পারব।”
ভারতের নাগরিক না হয়ে এই সংক্রান্ত স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে মতামত জানালে যে বিতর্ক তৈরি হতে পারে, সে সম্পর্কে অবহিত আমেরিকার রাষ্ট্রদূতও। তাই গার্সেট্টি এই প্রসঙ্গে বলেন, “যখন শিশু, নারী-সহ বহু মানুষ মারা যাচ্ছেন, তখন এই বিষয়ে বিচলিত হতে আপনার ভারতীয় হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।” বিষয়টি যে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়, সে কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। কংগ্রেসের তরফে এই প্রসঙ্গে মুখ খুলে বলা হয়েছে, “আমেরিকার রাষ্ট্রদূত ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মুখ খুলছেন, এই ঘটনা ‘বিরল’।’’ দলের নেতা মণীশ তিওয়ারি একটি টুইট করে জানান, অতীতে পঞ্জাব, জম্মু ও কাশ্মীর কিংবা উত্তর-পূর্ব ভারতে আগুন জ্বললেও আমেরিকার রাষ্ট্রদূত এই সব বিষয়ে মুখ খোলেননি। বিজেপির বক্তব্য অবশ্য এখনও জানা যায়নি।
প্রসঙ্গত, মণিপুরে দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ধারাবাহিক হিংসায় নিহতের সংখ্যা দেড়শো ছুঁতে চলছে। ঘরছাড়া প্রায় ৫০ হাজার মানুষ! এর আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদল বৈঠক করলেও তার পরেও হিংসার একাধিক ঘটনা ঘটেছে সে রাজ্যে। গত ৩ মে মণিপুরের জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর বিক্ষোভ-মিছিল ঘিরে উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই কুকি এবং মেইতেই জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে।