কৃষকদের ট্র্যাক্টর মিছিল। ছবি পিটিআই।
‘দিল্লি চলো’ অভিযান স্থগিত থাকলেও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকেরা। সোমবার থেকেই তাঁরা ‘ট্র্যাক্টর মিছিল’ কর্মসূচি শুরু করেছেন। উত্তরপ্রদেশের একাধিক জেলার কৃষকেরা তাঁদের ট্র্যাক্টর নিয়ে জাতীয় সড়কের উপর মিছিল করেন। তার পর সেখানেই নিজেদের ট্র্যাক্টরগুলি পর পর দাঁড় করিয়ে রাস্তা ‘অবরোধ’ করেন। যার জেরে দিল্লি-নয়ডা সীমানায় যান চলাচল বিঘ্ন ঘটেছে।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, মিরাট, মুজাফফ্রনগর, সাহারানপুর, হাপুর-সহ বিভিন্ন জেলা থেকে কৃষকেরা ট্র্যাক্টর মিছিল বার করেন। ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের (টিকায়েত) (বিকেইউ) নেতৃত্বেই এই কর্মসূচি নিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের কৃষকেরা। বিকেইউ-র কথায়, ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি)-সহ আরও কয়েকটি দাবি নিয়ে পঞ্জাব এবং হরিয়ানার কৃষকেরা আন্দোলন করছেন। তাঁদের সমর্থন জানাতেই ট্র্যাক্টর মিছিল কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভরত কৃষকদের আরও দাবি, নরেন্দ্র মোদী সরকার যাতে তাঁদের কথা শোনেন এবং তাঁদের ভুলে না যান তাই এই কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে।
বিকেইউ-র এক নেতার কথায়, ‘‘আমরা চণ্ডীগড়ে যুক্ত মোর্চার বৈঠকে যোগ দিয়েছিলাম। আমরা একটা ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করেছি। সেই কমিটিতেই বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করা হয়। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কোনও কৃষক সংগঠন যদি যুক্ত মোর্চার পাশে থাকতে চায়, তবে কমিটির সঙ্গে আলোচনা করতে পারে।’’
সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক কৃষক নেতা বলেন, ‘‘আমরা এখনও সরকারের তরফে কোনও বার্তা পাইনি। আলোচনার পথ সব সময় খোলা থাকবে। আমরা আলোচনা চাই। তাই এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।’’ ট্র্যাক্টর মিছিলের জেরে অবরুদ্ধ যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে। সেখানেই পুলিশ মিছিল আটকে দেয়। এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যাতে কোনও অশান্তি না ছড়ায় তাই পুলিশ আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছিল। মিছিল যাতে রাজধানীতে ঢুকতে না পারে তাই দিল্লি-নয়ডা সীমানায় ব্যারিকেড বসানো হয়েছে। নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
অন্য দিকে, নিজেদের একাধিক দাবিতে ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে অবস্থান বিক্ষোভ করছেন কৃষকেরা। সোমবার এই অবস্থান বিক্ষোভ ১৩ দিনে পা দিল। বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে বন্ধ ছিল দিল্লিতে প্রবেশের সিঙ্ঘু এবং টিকরি সীমানা। সেখানে বড় বড় বোল্ডার, বালির বস্তা, পেরেক পুঁতে রাখা হয়। রবিবার সেই দুই সীমানা খুলে দেওয়া হল। সিদ্ধান্ত ঘোষণা হতেই ক্রেন দিয়ে সরানো হল ভারী বোল্ডার। সেই সঙ্গে হরিয়ানার সাত জেলায় মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবার পুনরায় সংযোগ চালু করা হয়েছে। কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ কর্মসূচি ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত থাকলেও দিল্লি সীমানায় অবস্থান বিক্ষোভ চলবে যত ক্ষণ না দাবিপূরণ হচ্ছে। লোকসভা ভোট ঘোষণা হওয়ার পর আচরণবিধি চালু হলেও এই বিক্ষোভ চলবে বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন কৃষক নেতা সরওয়ান সিংহ পন্ধের।