দুর্ঘটনার পর চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: পিটিআই।
৩০ সেকেন্ডের মধ্যে পুরো আগুনের গ্রাসে চলে গিয়েছিল রাজকোটের গেমিং জ়োনের ভিতরে থাকা বহুতলটি। ফলে অনেকেই বেরোনোর সুযোগ পাননি। কেউ কেউ আবার দোতলা থেকে ঝাঁপ মেরে প্রাণ বাঁচিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, গেমিং জ়োনের ভিতরে থাকা যে বহুতলে আগুন লেগেছিল, সেই বহুতলটি গোটাটাই দাহ্যপদার্থে ঠাসা ছিল। বহুতলের অন্দরসজ্জার জন্য রাবার, রেক্সিন, থার্মোকল এবং ফোমের মতো জিনিস ব্যবহার করা হয়েছিল। ফলে আগুন আরও দ্রুত ছড়াতে সাহায্য করেছিল এই অন্দরসজ্জায় ব্যবহৃত জিনিসগুলিই। শুধু তাই-ই নয়, ফাইবার এবং কাপড়ও ব্যবহার করা হয়েছিল। এ ছাড়াও গেমিং জ়োনের মেরামতির কাজ চলছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। সে কারণে যত্রতত্র কাঠ, টিনের শেডও পড়েছিল। ওয়েল্ডিংয়ের কাজ চলছিল। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, সেখান থেকেই আগুন লেগেছিল গেমিং জ়োনে।
তদন্তকারীরা আরও জানাচ্ছেন, গেমিং জ়োনের ওই বহুতলে ২০০০ লিটার ডিজ়েল এবং ১৫০০ লিটার পেট্রল মজুত করা ছিল। তিন তলা ওই ভবনের নীচের তলাতে মজুত ছিল ওই জ্বালানি। আর আগুন প্রথম লেগেছিল নীচের তলাতেই। বিপুল পরিমাণ জ্বালানি মজুত থাকায় সেই আগুন কয়েক সেকেন্ডে গ্রাস করে নেয় বহুতলটিকে। এই বহুতলে ওঠানামার জন্য একটি মাত্রই সিঁড়ি ছিল। ফলে নীচ থেকে আগুন উপরের তলের দিকে যেতে থাকায় উপর থেকে নামার উপায় ছিল না। ফলে দ্বিতল এবং তৃতীয় তলে অনেকেই আটকে পড়েছিলেন। ফলে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা করছে প্রশাসন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রাজকোটের এই গেমিং জ়োন অত্যন্ত জনপ্রিয়। প্রতি দিন বেশ ভিড় হত এই জ়োনে। তবে সপ্তাহান্তে নতুন নতুন ‘অফার’ থাকায় ভিড় আরও বেশি হয়। এ সপ্তাহে ৫০০ টাকার টিকিট বিক্রি হচ্ছিল ৯৯ টাকায়। ফলে সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি কেউ। তাই শনিবার ভিড়ও হয়েছিল যথেষ্ট। ওই বহুতলে যে সব শিশু খেলছিল, তাদের মধ্যে যারা বেঁচে গিয়েছে, তাদের কেউ কেউ জানিয়েছে, আচমকাই এক কর্মী এসে জানান, নীচের তলায় আগুন লেগেছে, দ্রুত বাইরে বেরোতে হবে। এই খবরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বহুতলের ভিতরে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। আচমকাই বহুতলটি ভেঙে পড়ে। তার নীচে চাপা পড়ে যান অনেকে।
এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ইতিমধ্যেই সিট গঠন করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে গেমিং জ়োনের মালিক, ম্যানেজার-সহ তিন জনকে। শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৯ শিশু-সহ ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে।