গ্রেফতার ব্যবসায়ী পীযূষ জৈন। ফাইল ছবি।
৩১ কোটি টাকা আয়কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন কানপুরের ব্যবসায়ী পীযূষ জৈন। তাঁর গ্রেফতারিতে অবাক মহল্লা। বরাবরই অত্যন্ত সাধারণ জীবনযাপন করতেন যে পীযূষ, তাঁরই কিনা সম্পত্তি গুনতে বেলা যায় তদন্তকারীদের!
১২০ ঘণ্টা ম্যারাথন তল্লাশি! কানপুরের সুগন্ধী ব্যবসায়ী পীযূষের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে ৩০০ কোটি নগদ (শেষ পাওয়া হিসেব অনুযায়ী), সম্পত্তির নথি, তার মধ্যে দুটি সম্পত্তি দুবাইয়ে এবং রাশি রাশি সোনা।
পীযূষের বাড়িতে গচ্ছিত এত সোনাদানা দেখে চোখ কপালে প্রতিবেশীদের। মুখে কেবল একটাই কথা, বাইরে থেকে দেখে এমনটা ঘুণাক্ষরেও টের পাওয়া পাননি কেউ। প্রতিবেশীদেরই একজন বলেন, ‘‘ওঁকে বরাবরই স্কুটার কিংবা হেঁটে যাতায়াত করতে দেখেছি। উৎসব, অনুষ্ঠানে একদম সাদামাটা পোশাকেই দেখা যেত। অন্যের ব্যাপারে কোনওদিন নাক গলাতে দেখিনি। সেই মানুষ তলে তলে এত!’’
প্রতিবেশীরাই জানালেন, পীযূষের দাদুর ছিল কাপড় ছাপার ব্যবসা। পীযূষ ও তাঁর ভাই অম্বরীশ, দু’জনেই কানপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতকোত্তর করেছেন।
অন্য এক প্রতিবেশী জানালেন, পীযূষ প্রথম জীবনে মুম্বইয়ে ফেরিওয়ালার কাজ করতেন। রসায়নে দক্ষতা থাকায় পাশাপাশি সাবান, কাপড় কাচার গুঁড়ো সাবানের উপাদানও তৈরি করতে শুরু করেন। কয়েক বছরের মধ্যেই পারিবারিক ব্যবসার ভার এসে পড়ে পীযূষের কাঁধে। একই সঙ্গে চলতে থাকে সাবান, কাপড় কাচার গুঁড়ো সাবানের উপাদানের ব্যবসাও। সেই থেকে পীযূষ শুরু করেন গুটখার উপাদান তৈরি। কিছুদিনের মধ্যেই পীযূষ নিজের সুগন্ধির ব্যবসা খোলেন। ব্যবসার পরিধি বাড়ায়, এই সময় কনৌজ থেকে কানপুরে চলে আসেন পীযূষ।
পীযূষের তিন সন্তান। সবচেয়ে বড় মেয়ে নীলাংশা। পেশায় পাইলট নীলাংশার বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তল্লাশির সময় কানপুরের বাড়িতেই ছিলেন প্রত্যুষ ও প্রিয়াংশ— পীযুষের দুই ছেলে। পীযূষের বাবা মহেশচন্দ্র জৈন চিকিৎসার জন্য তখন দিল্লিতে।
এ দিকে পীযুষের বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর। সমাজবাদী পার্টির অভিযোগ, বিজেপি-র প্রশ্রয়েই বাড়বাড়ন্ত পীযূষদের মতো লোকেদের। প্রত্যাশিত ভাবেই সমাজবাদী পার্টির অভিযোগ খারিজ করে পাল্টা অখিলেশ যাদবের পার্টির দিকে আঙুল তুলেছে পদ্ম শিবির।