Mumbai BMW Crash

বিএমডব্লিউকাণ্ড: কী ভাবে শিন্ডেসেনার নেতার পুত্র মিহিরের হদিস পেল পুলিশ? ‘বেপাত্তা’ ছিলেন তিন দিন

রবিবার ভোরে স্ত্রী কাবেরীকে নিয়ে সুসান ডকে ব্যবসার জন্য মাছ কিনতে গিয়েছিলেন প্রদীপ নাকভার। স্কুটারে করে মাছ কিনে ফেরার পথে ঘটে দুর্ঘটনা। প্রদীপের স্কুটারের পিছনে বিএমডব্লিউ নিয়ে ধাক্কা মারেন মিহির।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৪ ০৯:৩৩
Share:

(বাঁ দিকে) শিন্ডেসেনা নেতার পুত্র মিহির শাহ। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

৭২ ঘণ্টা ‘বেপাত্তা’ থাকার পর বিএমডব্লিউকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত মিহির শাহকে মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেফতার করেছে মুম্বই পুলিশ। কিন্তু তিন দিন কোথায় গা-ঢাকা দিয়ে ছিলেন শিন্ডেসেনার নেতা রাজেশ শাহের পুত্র? কী ভাবে তাঁর হদিস পেল পুলিশ? এই সব প্রশ্নই এখন ঘুরছে নানা মহলে। যদিও পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, এক বন্ধুর ফোনের সূত্র ধরেই মিহিরের হদিস পেয়েছে তারা।

Advertisement

রবিবার ভোরে স্ত্রী কাবেরীকে নিয়ে সুসান ডকে ব্যবসার জন্য মাছ কিনতে গিয়েছিলেন প্রদীপ নাকভার। মাছ কিনে ফেরার পথে প্রদীপের স্কুটারের পিছনে বিএমডব্লিউ নিয়ে ধাক্কা মারার অভিযোগ ওঠে মিহিরের বিরুদ্ধে। রাস্তায় ছিটকে পড়েন প্রদীপ। কিন্তু তাঁর স্ত্রী কাবেরীকে প্রায় দেড় কিলোমিটার পথ টেনে নিয়ে যায় বিএমডব্লিউ। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় প্রদীপের স্ত্রীর। সেই ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন শিন্ডেসেনার নেতার পুত্র। অবশেষে মঙ্গলবার ধরা পড়েন পুলিশের জালে।

তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, রবিবার ঘটনার পর গাড়ি নিয়ে বান্দ্রার দিকে চলে গিয়েছিলেন মিহির। সেখান থেকেই বাবাকে ফোন করেন তিনি। দু’জনের মধ্যে কী কথা হয়েছিল তা জানা যায়নি। সেই কথোপকথন উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে গাড়িতে লাগানো শিবসেনা দলের স্টিকার উঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন মিহির, এমনই জানতে পেরেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর বান্দ্রার কালানগর এলাকায় বিএমডব্লিউ গাড়িটি রেখে পালিয়ে যান মিহির। পুলিশের অনুমান, সেখান থেকেই মিহির গিয়ে হাজির হন তাঁর প্রেমিকার বাড়িতে। প্রেমিকাই ফোন করে মিহিরের বোনদের গোটা ঘটনা জানান। তার পর বোরিভালির ওই বাড়ি থেকে মিহিরকে তুলে নিয়ে যান তাঁর বোনেরাই।

Advertisement

রবিবার সকাল থেকেই মিহির এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের ফোন বন্ধ ছিল। কিছুতেই তাঁর অবস্থান জানা সম্ভব হচ্ছিল না পুলিশের। মিহিরকে ধরতে পুলিশের বিশেষ দল গঠন করা হয়। মিহিরের মা, দুই বোন এবং বন্ধুদের ফোন ট্র্যাক করা শুরু করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর মা, দুই বোন এবং বন্ধু অবদীপের সঙ্গে মুম্বই থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে শাহপুরের একটি রিসর্টে আশ্রয় নিয়েছিলেন মিহির। রবিবার এবং সোমবার রিসর্ট থেকে বারই হননি তিনি। এমনকি, বন্ধ ছিল তাঁর মোবাইলও। তবে মঙ্গলবার সকালে বন্ধুকে নিয়ে ভিরারে গিয়েছিলেন মিহির। সেখানে মাত্র ১৫ মিনিটের জন্য অবদীপ তাঁর মোবাইল ফোনটি চালু করেন। ওত পেতে ছিল পুলিশ। অবদীপের মোবাইল চালু হতেই তা ট্র্যাক করে ফেলেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।

তার পরই মিহিরদের ‘অস্থায়ী’ ঠিকানায় হানা দেয় পুলিশ। মিহির-সহ বাকি সকলকেই গ্রেফতার করে তারা। এই ঘটনায় মিহির ছাড়াও ১১ জনকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মিহিরের বাবা রাজেশ শাহ এবং গাড়িচালক রাজঋষি বিদাওয়াতকে আগেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। যদিও গ্রেফতারির ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আদালত থেকে ১৫ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পান রাজেশ। তবে পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন গাড়িচালক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement