বিজেপিকে কী ভাবে সুবিধা করে দিতে পারেন মায়াবতী? ফাইল চিত্র।
আসাদউদ্দিন ওয়েইসির এমআইএম বিজেপি-বিরোধী শিবিরের মুসলিম ভোটে ভাগ বসালে যে কোনও নির্বাচনেই বিজেপির সুবিধা হয়ে যায়। এ বার উত্তরপ্রদেশের ভোটে মায়াবতীর বিএসপি-ও মুসলিম ভোটে ভাগ বসিয়ে বিজেপিকে একই রকম ফায়দা করে দিতে পারেন বলে মনে করছেন কেন্দ্রের শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
উত্তরপ্রদেশের চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণের আগে অমিত শাহ এক সাক্ষাৎকারে নিজেই বলেছেন, মায়াবতীর প্রাসঙ্গিকতা এখনও শেষ হয়ে যায়নি। দলিতদের মধ্যে জাটভ ভোট এখনও বিএসপি-র সঙ্গেই রয়েছে। মুসলিমরাও বিএসপি-কে ভোট দেবেন। রাজনীতিকরা মনে করছেন, অমিত শাহের অঙ্ক স্পষ্ট। তিনি মনে করছেন, ওয়েইসির সঙ্গে মায়াবতীও সমাজবাদী পার্টির মুসলিম ভোটে ভাগ বসাবেন। তাতে বিজেপিরই লাভ। তাই মায়াবতীর গুরুত্ব বাড়িয়ে দিতে চাইছেন শাহেরা।
অমিত শাহের এই মন্তব্যের পরে এসপি ও কংগ্রেস নেতারা বলছেন, মায়াবতী এ বার কেন দলিতদের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক মুসলিমকে প্রার্থী করেছেন, তা এখন স্পষ্ট হচ্ছে। এক সময় উত্তরপ্রদেশের বিজেপি শরিক সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টি এ বার সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে জোট করেছে। ওই দলের সভাপতি ও পি রাজভড়ের অভিযোগ, অমিত শাহ নিজেই মায়াবতীর দলের প্রার্থী বাছাই করে দিয়েছেন। মায়াবতী শুধু তাঁদের বিএসপি-র প্রতীক দিয়েছেন। সমাজবাদী পার্টির নেতৃত্বাধীন জোটের ভোট কাটতেই এই কৌশল। অমিত শাহ নিজে অবশ্য বিজেপির ফায়দা পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাননি। তবে তাঁর বক্তব্য, আসনের উপর নির্ভর করছে।
গত পাঁচ বছর উত্তরপ্রদেশের রাজনীতির ময়দানে মায়াবতী একেবারেই সক্রিয় ছিলেন না। খোদ অমিত শাহই ডিসেম্বরে উত্তরপ্রদেশে গিয়ে বলেছিলেন, মায়াবতী ঘরে বসে রয়েছেন। মায়াবতী এর পর প্রচার শুরু করলেও জনসভার সংখ্যা খুবই কম। রাজনীতিকেরা মনে করছেন, তিনি বিজেপির ব্যাপারে নরম অবস্থান নিয়েছেন। এবং বিজেপিকে সুবিধা করে দিতেই এসপি, কংগ্রেসকে বেশি নিশানা করছেন। তার থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ হল, মায়াবতী এ বার দলিত-মুসলিম ‘সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং’-এর উপরে ভরসা করেছেন। তাঁর তিন ভাগের এক ভাগ প্রার্থীই মুসলিম। অথচ ২০০৭-এ মায়াবতী দলিত-ব্রাহ্মণ ভোটকে এককাট্টা করে ক্ষমতায় এসেছিলেন। এ বার দলিতদের সঙ্গে মুসলিমদের ভোটও টানতে চাওয়ায় এসপি, কংগ্রেস তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপির সঙ্গে গোপন আঁতাঁতের অভিযোগ তোলার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে।
এই অভিযোগ ওঠায় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ দাবি করেছেন, তাঁদের সঙ্গে কারও সমঝোতা হয়নি। এসপি, কংগ্রেসের মতোই বিএসপি-ও বিজেপির প্রতিদ্বন্দ্বী। তারা নিজেদের মধ্যে দ্বিতীয়, তৃতীয় স্থানের জন্য লড়ছে। আর বিজেপির সঙ্গে তাঁর আঁতাঁত নেই বোঝাতে মায়াবতী যোগী সরকারকে নিশানা করে বলেছেন, দলিত, অনগ্রসর, মুসলিমরা এই সরকারের আমলে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।