ভবেশ ভিন্ডে। ছবি: সংগৃহীত।
পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিতে মাত্র তিন দিনেই মুম্বই থেকে গুজরাত হয়ে রাজস্থানে পৌঁছে গিয়েছিলেন। তবে বার বার ঠিকানা বদলেও শেষরক্ষা হল না মুম্বইয়ে বিলবোর্ড ভেঙে ১৬ জনের মৃত্যুর ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত ভবেশ ভিন্ডের। মুম্বইয়ের ঘাটকোপারে যে সংস্থা ওই বিলবোর্ডটি বসিয়েছিল, তার মালিক ভবেশকে বৃহস্পতিবার রাজস্থানের উদয়পুর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
শুক্রবার সকালে ভবেশকে মুম্বই নিয়ে আসা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁকে আদালতে হাজির করানো হবে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ ওই ব্যবসায়ীকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আর্জি জানাতে পারে।
ভিন্ডে ‘ইগো মিডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের একটি সংস্থার মালিক। গত সোমবার বিলবোর্ড বিপর্যয়ের পরেই তিনি বেগতিক বুঝে মুম্বই থেকে মহারাষ্ট্রের লোনাভোলায় চলে যান। পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে, তার পর ভিন্ডে মুম্বই ফিরে আসেন। কিন্তু সেখানে পুলিশ অভিযুক্তের খোঁজে তৎপরতা বাড়িয়েছে বুঝতে পেরেই চলে যান ঠাণে। সেখান থেকে গুজরাতের আমদাবাদ। তার পর একাধিক বার আস্তানা বদলে সোজা রাজস্থানের উদয়পুরে। জানা গিয়েছে পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিতে গত তিন দিনে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নাম ব্যবহার করছিলেন ভিন্ডে।
বিলবোর্ড বিপর্যয়ের পরেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী তথা শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডে। তার পর ভিন্ডের খোঁজে তল্লাশি অভিযানে নামে মুম্বই পুলিশের আট সদস্যের দল। নেতৃত্বে মুম্বই পুলিশের অপরাধদমন শাখার যুগ্ম কমিশনার লক্ষ্মী গৌতম এবং ডেপুটি কমিশনার বিশাল ঠাকুর। বিলবোর্ড ভেঙে পড়ার পেরই ভবেশের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়। এফআইআরেও অন্যতম মূল অভিযুক্ত হিসাবে তাঁর নাম ছিল। ভবেশের বিরুদ্ধে এ ছাড়াও অন্যান্য ঘটনায় অন্তত ২০টি মামলা রয়েছে। তার মধ্যে একটি ধর্ষণের অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, নিয়ম না মেনে ভবেশের সংস্থাকে বিলবোর্ড বসানোর টেন্ডার পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল।
সোমবার ঘাটকোপারে যে বিলবোর্ডটি ঝড়ের কারণে ভেঙে পড়েছিল, তার দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ ছিল ১২০ ফুট করে। অথচ, মুম্বই শহর এলাকায় ৪০ ফুটের বেশি লম্বা বা চওড়া কোনও বিলবোর্ডে ছাড়পত্র দেওয়ার কথা নয় পুরসভার। ঘাটকোপারের দুর্ঘটনার পর বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের (বিএমসি) তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, এই মুহূর্তে মুম্বই শহরে নতুন করে কোনও হোর্ডিং লাগানোর অনুমতি দেওয়া হবে না। সরকারি, বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই এই নির্দেশ প্রযোজ্য হবে।