—প্রতীকী ছবি।
মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে প্রসূতির অস্ত্রোপচার করলেন চিকিৎসকেরা। মারা গেলেন মা এবং শিশু। ভারতের বাণিজ্যনগরী মুম্বইয়ের ঘটনা। দেশের সব থেকে ধনী পুরসভা বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপাল কর্পোরেশন (বিএমসি) পরিচালিত হাসপাতালে এই কাণ্ড হয়েছে।
বিএমসির বার্ষিক বাজেট হল ৫২ হাজার কোটি টাকা। তার মধ্যে ১২ শতাংশ, অর্থাৎ ৬,২৫০ কোটি বরাদ্দ করা হয় স্বাস্থ্যখাতে। তার পরেও কী করে পুরসভার পরিচালিত হাসপাতালে এই ঘটনা, সেই প্রশ্ন উঠছে।
খুসরুদ্দিন আনসারি শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধী। তাঁর একটি পা নেই। স্ত্রী সাহিদুনকে সুষমা স্বরাজ মেটারনিটি হোমে ভর্তি করিয়েছিলেন প্রসবের জন্য। ১১ মাস আগে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। প্রসূতির পরিবারের অভিযোগ, সোমবার বিদ্যুৎ চলে যায় হাসপাতালে। তিন ঘণ্টা ধরে জেনারেটর চালানো হয়নি। তাদের আরও অভিযোগ, সাহিদুন এবং তাঁর সন্তানের মৃত্যুর পরেও আরও এক প্রসূতির সি সেকশন করা হয়েছে। এর পরেই হাসপাতালের সামনে প্রতিবাদে শামিল হয় প্রসূতির পরিবার। এর পরেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে বিএমসি।
আনসারির মা বলেন, ‘‘আমার পুত্রবধূ একেবারেই সুস্থ ছিলেন। ন’মাসের গর্ভবতী। সব রিপোর্টও ঠিক ছিল। ২৯ এপ্রিল সকাল ৭টায় তাঁকে প্রসবের জন্য নিয়ে যান চিকিৎসকেরা। সারা দিন তাঁকে রেখে দেওয়া হয়। রাত ৮টায় বলা হয়, তিনি সুস্থ রয়েছেন। তাঁরা জানান, স্বাভাবিক উপায়ে হবে প্রসব। এর পর ওঁকে যখন দেখতে যাই, দেখি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন।’’ ওই মহিলার অভিযোগ, এর পর চিকিৎসকেরা জানান, সাহিদুনের অস্ত্রোপচার করতে হবে। সে সময় বিদ্যুৎ চলে যায়। তার পরেও অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে বলেননি চিকিৎসকেরা। এর পর মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে সি সেকশন করা হয়। আনসারির মা বলেন, ‘‘শিশুটির মৃত্যু হয়। আমরা কান্নাকাটি শুরু করি। তখন চিকিৎসকেরা বলেন, মা বেঁচে যাবেন। তখন ওঁরা সিয়ন হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার কথা বলেন। যদিও তার আগেই মৃত্যু হয় সাহিদুনের।’’ চিকিৎসকদের শাস্তির দাবি তুলেছেন আনসারি।
বিএমসির বিজেপি কাউন্সিলর জাগৃতি পাতিল বলেন, ‘‘ওই হাসপাতালের অবস্থা খারাপ। এর আগেও হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা উচিত।’’