মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান পুলিশকে এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন। ছবি: টুইটার।
ছেলে হিন্দু। বান্ধবী মুসলিম। তাঁদের ‘অপরাধ’, একসঙ্গে একটি রেস্তরাঁয় বসে খাবার খাচ্ছিলেন তাঁরা। তাই রেস্তরাঁ থেকে বেরিয়ে আসতেই হেনস্থার মুখে পড়তে হল যুগলকে। মারধরও করা হল তাঁদের। ঘটনাস্থলে উপস্থিত দু’জন ওই যুগলকে উদ্ধারে এগিয়ে এলে তাঁদেরও ছুরি মারার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাতে মধ্যপ্রদেশের ইনদওরে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুগল রেস্তরাঁ থেকে বেরিয়ে স্কুটিতে চাপতেই তাঁদের ঘিরে ধরে জনা কুড়ি মুসলিম ধর্মাবলম্বী যুবকের ভিড়। প্রথমে হিন্দু ওই তরুণকে চড়থাপ্পড় মারা হয়। পরে তাঁর বান্ধবীকে প্রশ্ন করা হয়, মুসলমান হওয়া সত্ত্বেও কেন তিনি ভিন্ন ধর্মের এক জন তরুণের সঙ্গে ঘুরছেন।
পুরো ঘটনার ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, স্কুটিতে থাকা ওই যুগলকে ঘিরে ফেলার পর তাঁদের হেনস্থা করা শুরু করে ভিড়। পরে ওই তরুণকে মারধর করা হয়। মুসলিম তরুণীকে বলা হয়, ‘‘তুমি হিজাব পরে এক জন ভিন্ন ধর্মের ছেলের সঙ্গে কেন ঘুরছ? বাইরের খাবার খাওয়ার ইচ্ছা হলে তোমার বাড়িতে আনিয়ে খাওয়া উচিত ছিল।’’ এর মধ্যেই দুই যুবক যুগলকে উদ্ধার করতে এলে বাকিদের সঙ্গে তাঁদের ধস্তাধস্তি হতেও দেখা গিয়েছে ওই ভিডিয়োতে। পরে তাঁদের ছুরির আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ।
ইনদওরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার রাজেশ রঘুবংশী বলেন, ‘‘তরুণী অভিযুক্তদের জানিয়েছিলেন যে, তিনি বাবা-মাকে জানিয়েই রেস্তরাঁয় খেতে এসেছেন। ছেলেটিকে মারধর করার জন্যও তিনি সরব হন। অন্য দিকে, অন্য দুই যুবক ওই যুগলকে উদ্ধার করতে এলে তাঁদের ভিড়ের মধ্যে থেকে ছুরি চালানো হয়।’’
মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান পুলিশকে এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
তুকোগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক কমলেশ শর্মা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে এবং এখনও পর্যন্ত সাত জন অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ছ’জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার একই রকমের একটি ঘটনায় তীব্র শোরগোল তৈরি হয় কর্নাটকের চিক্কাবল্লপুর এলাকায়। মুসলমান এক তরুণীর সঙ্গে একটি দোকানে বসে খাবার খাওয়ার ‘অপরাধে’ তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন কয়েক জন যুবক। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ইতিমধ্যেই অভিযুক্তদের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।