জোশীমঠের মতো পরিস্থিতি দেখা দেওয়াও খুব একটা অস্বাভাবিক নয় বলে মেনে নেওয়া হয়। —ফাইল চিত্র।
হিমালয়ের অবস্থা নড়বড়ে। তাই জোশীমঠের মতো পরিস্থিতি হিমালয়ের পাদদেশের যে কোনও স্থানের হতে পারে। রাজ্যসভায় এ কথা স্বীকার করল কেন্দ্র। তবে এই সব অঞ্চলে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে তারা নীরবই রইল। জোশীমঠের পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে রাজ্যসভায়। সরকারের তরফে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়ার সময় জানানো হয় যে, হিমালয়ের পার্বত্য এলাকার অধিকাংশ জায়গা বর্তমানে সঙ্কটজনক অবস্থায় রয়েছে।
উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার জোশীমঠই শুধুমাত্র ভূমি বিপর্যয়ের শিকার নয়। হিমালয়ের কিছু এলাকার ভূমির অবস্থা এমন দুর্বিষহ যে, যে কোনও মুহূর্তে সেখানে ভূমি বসে যেতে পারে। ভূমিধসও নামতে পারে। জোশীমঠের মতো পরিস্থিতি দেখা দেওয়াও খুব একটা অস্বাভাবিক নয় বলে মেনে নেওয়া হয়। কিন্তু সাংসদের তরফ থেকে এই ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা চাওয়া হলে ভূবিজ্ঞান মন্ত্রকের তরফে কোনও বিবরণ দেওয়া হয়নি। বেআইনি নির্মাণ নিয়েও কিছু বলা হয়নি।
যদিও তাদের তরফ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ওই এলাকায় ভারী নির্মাণ প্রকল্পের কারণেই এই ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। পর্যাপ্ত পরিকল্পনা ছাড়া কোনও মতেই বড় মাপের নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করে দেওয়া উচিত নয় বলেও জানানো হয়েছে। কোনও বড় মাপের নির্মাণ প্রকল্পের কাজে হাত দেওয়ার আগে পরিবেশগত দিক দিয়ে সব রকম পর্যবেক্ষণ করে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে স্থানীয় প্রশাসনের তরফে সেই কাজের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা যেতে পারে।
ভূবিজ্ঞান মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ রাজ্যসভায় জানিয়েছেন যে, ১৯৭৬ সালে মহেশচন্দ্র মিশ্র কমিটি গঠন করে একটি রিপোর্ট তৈরি করেছিল। সেই রিপোর্টে লেখা ছিল, ভূমির ভারবহন ক্ষমতা পরীক্ষা করে বড় নির্মাণ প্রকল্পের পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। আপের সাংসদ সঞ্জয় সিংহ এই বিষয়ে প্রশ্ন করলে অবশ্য চুপ করে থেকেছেন জিতেন্দ্র। তবে তিনি বলেছেন, ‘‘জোশীমঠ এলাকায় সমস্ত নির্মাণকাজ ইতিমধ্যে বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’’ হেলং মাড়োয়াড়ি বাইপাস রোড এবং তপোবন বিষ্ণুগড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। রাজ্য এবং কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে জোশীমঠের পরিস্থিতির উপর সব সময় নজর রাখা হচ্ছে বলে জিতেন্দ্র জানিয়েছেন।