প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
গত ৩৭ বছরে পর পর দু’বার কোনও দল জিতে আসতে পারেনি হিমাচলপ্রদেশে। আগামিকালের ভোটে সেই রেকর্ড ভাঙতে মরিয়া নরেন্দ্র মোদীর দল। তবে মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, আপেলের ন্যায্য দাম না পাওয়া, সারের অপ্রতুলতার মতো সমস্যার পাশাপাশি শাসক শিবিরকে চিন্তায় রেখেছেন বিজেপির বিদ্রোহী নেতারা। রাজ্যের ৬৮টির মধ্যে অন্তত কুড়িটি আসনে দলের প্রাক্তন নেতাদের সঙ্গে লড়াইয়ে নামতে হচ্ছে বিজেপি প্রার্থীদের। পরিস্থিতি সামলাতে ফের জনগণের উদ্দেশে খোলা চিঠি লিখে বিজেপিকে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আনার আর্জি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
ভোটের ঠিক দু’দিন আগে ওই রাজ্যে এবিপি নিউজ এবং সি ভোটারের জনমত সমীক্ষায় ইঙ্গিত, ৬৮ আসনের বিধানসভায় ৩১-৩৯টি আসন পেতে পারে নরেন্দ্র মোদীর দল। কংগ্রেস পেতে পারে ২৯-৩৭টি আসন। অর্থাৎ লড়াই সমানে-সমানে। অন্য সংবাদমাধ্যমের সমীক্ষাতেও দেখা গিয়েছে, কংগ্রেস শাসক দলকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। এ ধরনের সমীক্ষা সব সময় যে মেলে, তা নয়। তবে জনগণের মনোভাবের একটা ইঙ্গিত মেলে, মনে করেন অনেকেই।
রাজ্যের অর্থনীতিতে আপেল চাষের বড় ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু ভোট বছরে বড়-বড় সংস্থাগুলি আঁতাঁত করে আপেলের দাম কমিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। ফলে কম দামে বড় ব্যবসায়ীদের আপেল বিক্রি করতে বাধ্য হন ছোট চাষিরা। এ বিষয়ে রাজ্য সরকারের নীরবতায় ক্ষুব্ধ আপেল চাষিদের বড় অংশ। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে সারের অপ্রতুলতা ও দাম বৃদ্ধি। একই সঙ্গে আপেল বোঝাই করার কাঠের বাক্সের উপরে ১৮ শতাংশ পণ্য পরিষেবা কর চাপানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন কৃষকেরা। শেষ পর্যন্ত চাষিদের ছয় শতাংশ ভর্তুকি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রাজ্য জুড়ে আপেল চাষিদের ওই ক্ষোভ উস্কে দিতে পিছপা হয়নি কংগ্রেস। এ ছাড়া গোটা দেশের মতোই বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধির শিকার হিমাচল। রাজ্যের যুবকদের বড় অংশের চাকরির প্রধান ভরসা ছিল সেনাবাহিনী। কিন্তু সেখানেও অস্থায়ী নিয়োগ শুরু হওয়ায় অসন্তোষের হাওয়া রয়েছে।
হিমাচলে লড়াই যে সহজ নয়, তা বুঝতে পেরে গতকাল খোলা চিঠি দেন নরেন্দ্র মোদী। তাতে কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যে (২০১৪-১৭) কেন্দ্রীয় প্রকল্প আটকে রাখার অভিযোগ তুলে ‘ডাবল ইঞ্জিন’ সরকার গড়ার প্রশ্নে সওয়াল করেন মোদী। পাশাপাশি উজ্জ্বলা যোজনা, ঘরে-ঘরে পানীয় জল, শৌচাগার নির্মাণে কেন্দ্রীয় সরকারের সাফল্যের দিকগুলি তুলে ধরে মহিলাদের ভোট নিশ্চিত করার উপরে জোর দেন মোদী। কংগ্রেস নেতৃত্বের কটাক্ষ, কেন্দ্র-রাজ্যে ক্ষমতায় থেকে রাজ্যের উন্নয়নে ব্যর্থ বিজেপি। শেষ প্রহরে তাই চিঠি দিয়ে মরিয়া চেষ্টায় নেমেছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে বিক্ষুব্ধ কাঁটায় ভুগছে কংগ্রেসও। প্রধান বিরোধী দলকেও অন্তত দশটি আসনে বিক্ষুব্ধ প্রার্থীদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।