কুয়ো থেকে তোলা হচ্ছে ভূগর্ভস্থ জল। —ফাইল চিত্র।
ছত্তীসগঢ়ের একাধিক অঞ্চলে জলে ইউরেনিয়ামের মাত্রা ঘিরে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। এই অঞ্চলগুলিতে জলে ইউরেনিয়ামের মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) অনুমোদিত ঊর্ধ্বসীমার চেয়ে তিন-চার গুণ বেশি। কোথাও বা ছয়-সাত গুণ পর্যন্ত বেশি। এমনকি সরকার অনুমোদিত ঊর্ধ্বসীমার চেয়েও বেশি। ছত্তীসগঢ়ের অন্তত ছয় জেলা থেকে সংগৃহীত জলের নমুনায় মাত্রাতিরিক্ত হারে ইউরেনিয়ামের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। তালিকায় রয়েছে দুর্গ, রাজনন্দগাওঁ, কাঙ্কের, বেমেতারা, বালোদ এবং কাওয়ারধা জেলা।
জলে লিটার পিছু ১৫ মাইক্রোগ্রামের চেয়ে বেশি ইউরেনিয়াম থাকলে, তা পানীয় জল হিসাবে না ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে হু। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ-ও জানিয়েছিল, ওই মাত্রার বেশি পরিমাণে ইউরেনিয়াম থাকা উদ্বেগজনক কি না, সেই বিষয়ে তাদের স্পষ্ট ধারণা নেই। ভারতের ক্ষেত্রে, লিটার পিছু জলে সর্বাধিক ৩০ মাইক্রোগ্রাম ইউরেনিয়াম থাকলেও, তা ব্যবহারযোগ্য বলে জানিয়েছে সরকার। যদিও চলতি বছরের জুনেই ভাবা পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র জানিয়েছিল, এক লিটার জলে ৬০ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত ইউরেনিয়াম থাকলেও তা নিরাপদ।
তবে ছত্তীসগঢ়ের এই ছয় জেলায় জলের নমুনায় পাওয়া ইউরেনিয়ামের মাত্রা ৬০ মাইক্রোগ্রামের সীমাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। ছয় জেলায় জলে ইউরেনিয়ামের গড় মাত্রা লিটার পিছু ৮৬-১০৫ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত। বালোদের একটি গ্রামে এক লিটার জলে ১৩০ মাইক্রোগ্রাম ইউরেনিয়াম পাওয়া গিয়েছে। কাঙ্কেরের একটি গ্রাম থেকে প্রাপ্ত নমুনায় ইউরেনিয়ামের মাত্রা লিটার পিছু ১০৬ মাইক্রোগ্রাম।
প্রথমে ইউরেনিয়ামের অস্বাভাবিক মাত্রায় উপস্থিতি পাওয়া যায় বালোদ জেলার দেবতরাই গ্রাম থেকে। প্রায় ২৫ বছরের পুরনো একটি নলকূপের জলের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। এর পর আশপাশের আরও ছ’টি জেলায় বিভিন্ন জায়গায় জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। নমুনাগুলিকে পাঠানো হয় ভিলাই ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে। সেখানে পরীক্ষা করে দেখা যায় ইউরেনিয়ামের গড় মাত্রা লিটার পিছু ৮৬-১০৫ মাইক্রোগ্রাম।
ছত্তীসগঢ়ের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সভাপতি অশোককুমার ঘোষ সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, ভূগর্ভস্থ জলে ইউরেনিয়ামের মাত্রা অবশ্যই উদ্বেগের। এর জন্য বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ব্যাধি দেখা দিতে পারে। এমনকি ক্যানসারের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেননি তিনি।