প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি ডব্লিউ ডিয়েংডোর বেঞ্চ শুনানি ও সব তথ্য প্রমাণ বিচার করে বলে, যন্ত্রণা না হওয়া বা অন্তর্বাস পরে থাকাটা ধর্ষণ না হওয়ার প্রমাণ হতে পারে না।
প্রতীকী ছবি।
কোনও মহিলার ইচ্ছার বিরুদ্ধে, তার উপরে জোর খাটিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করাটাই ধর্ষণ বলে গণ্য হবে। সেই সময়ে নির্যাতিতা অন্তর্বাস পরে ছিলেন কি না, তাঁর যন্ত্রণার অনুভূতি হয়েছিল কি না— এ সব বিবেচ্য নয়। ধর্ষণের একটি মামলায় বুধবার মেঘালয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ এই মর্মে যে রায় দিয়েছেন, আইনজীবীদের একটা বড় অংশের মতে তা যুগান্তকারী।
২০০৬ সালে এক নাবালিকাকে ধর্ষণের ঘটনায় এক যুবককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ২০১৮ সালে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে দশ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল জেলা আদালত। রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করে অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী দাবি করেন, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মেয়েটি বলেছিল, ধর্ষণের সময়ে তার ব্যথা-যন্ত্রণা হয়নি। ঘটনার সময়ে ওই নাবালিকা অন্তর্বাসও পরে ছিল। আইনজীবী দাবি করেন— মেয়েটির অন্তর্বাস যখন খোলা হয়নি, সে যন্ত্রণাও পায়নি, তার অর্থ পুরুষাঙ্গ প্রবেশই করেনি এবং এই ঘটনাকে ধর্ষণের সংজ্ঞায় ফেলা যায় না।
কিন্তু প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি ডব্লিউ ডিয়েংডোর বেঞ্চ শুনানি ও সব তথ্য প্রমাণ বিচার করে বলে, যন্ত্রণা না হওয়া বা অন্তর্বাস পরে থাকাটা ধর্ষণ না হওয়ার প্রমাণ হতে পারে না। মেয়েটি স্পষ্ট জানিয়েছে তার উপরে জোর খাটানো হয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্টেও যৌনাঙ্গে আঘাত ও মানসিক আতঙ্কের কথা বলা হয়েছে। জোর করে মহিলার যৌনাঙ্গে পুরুষাঙ্গ ঘর্ষণ করা এবং প্রবেশ করানোর চেষ্টাই ধর্ষণ হিসাবে গণ্য হবে। এই অপরাধ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ (বি) ধারায় শাস্তিযোগ্য। অভিযুক্ত যুবককে দোষী সব্যস্ত করে তার কারাদণ্ড বহাল রেখেছে হাইকোর্ট।