পঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাই কোর্টে বিবাহবিচ্ছেদের পক্ষে রায়। —প্রতীকী চিত্র।
স্বামীকে ‘বৃহন্নলা’ বলে অপমান করতেন স্ত্রী। নিজেও আসক্ত ছিলেন পর্নোগ্রাফিতে। বিচ্ছেদের মামলায় স্ত্রীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগই করলেন যুবক। স্ত্রীর বিরুদ্ধে মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ তোলেন তিনি। পঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাই কোর্ট মহিলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। বিচ্ছেদের পক্ষেই রায় দিয়েছে উচ্চ আদালত।
দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদের মামলায় এর আগে পারিবারিক আদালত যুবকের পক্ষে রায় দিয়েছিল। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যান মহিলা। পঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাই কোর্টের বিচারপতি সুধীর সিংহ এবং বিচারপতি জসজিৎ সিংহ বেদীর ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি ছিল। মহিলার বক্তব্য ছিল, তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর উপর অত্যাচার করতেন। তাঁরা তান্ত্রিকের সহায়তায় বধূকে বশ করতে চেয়েছিলেন বলেও আদালতে জানান তিনি। অভিযোগ, তাঁকে নেশার ওষুধ খাওয়ানো হয়েছিল।
যুবকের তরফে পাল্টা আদালতে জানানো হয়, তাঁর স্ত্রী পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত। স্বামীকে বার বার ‘বৃহন্নলা’ বলে ডাকতেন এবং অপমান করতেন। শুধু তা-ই নয়, যুবক জানান, তাঁর মা বাতের ব্যথায় ভোগেন। তা সত্ত্বেও তাঁর মাকে বার বার সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে বাধ্য করতেন তাঁর স্ত্রী। নিজে দেরি করে ঘুম থেকে উঠে শাশুড়িকে দিয়ে সব কাজ করাতেন। সঙ্গে স্বামীর উপর চলত মানসিক অত্যাচারও।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, স্বামীকে ‘বৃহন্নলা’ বলে ডাকা বা তাঁর যৌন ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা মানসিক অত্যাচার এবং নিষ্ঠুরতার শামিল। গত ছ’বছর ধরে দম্পতি আলাদা থাকেন বলেও জানায় আদালত। উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে এবং যুক্তি বিশ্লেষণ করে বিচারপতিরা মহিলার আবেদন খারিজ করে দেন। পারিবারিক আদালতের নির্দেশই বহাল রাখা হয় হাই কোর্টেও। গত জুলাই মাসে পারিবারিক আদালত যুবকের পক্ষে বিচ্ছেদের রায় দিয়েছিল। এ ক্ষেত্রেও তা বহাল রাখা হয়েছে। মামলাকারী মহিলা শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলি এনেছিলেন, তার পর্যাপ্ত প্রমাণ আদালতে দেখাতে পারেননি। যা রায় তাঁর বিপক্ষে যাওয়ার অন্যতম কারণ।
বিচারপতির বক্তব্য, ‘‘সাম্প্রতিক কিছু মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের ভিত্তিতে বলা যায়, এ ক্ষেত্রে মামলাকারী মহিলার আচরণ নিষ্ঠুরতা এবং মানসিক অত্যাচারের সমান। স্বামীকে ‘বৃহন্নলা’ বলা, তাঁর মাকে ‘বৃহন্নলার জন্মদাত্রী’ বলা নিষ্ঠুরতা। তা ছাড়া, ওই দম্পতি গত ছ’বছর ধরে আলাদা থাকেন। আদালত মনে করছে, এই বিবাহে আর মীমাংসা সম্ভব নয়। এর পরেই বিবাহবিচ্ছেদে সিলমোহর দেয় আদালত।