আদালতে ঢোকার মুখে ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। ছবি: পিটিআই।
ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করাল ইডি। বুধবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে ঝাড়খণ্ডের বিশেষ আদালতে হাজির করানো হয় হেমন্তকে। দেখা যায়, ইডির গাড়ি থেকে নেমে হাসতে হাসতেই আদালতে ঢুকছেন তিনি।
সংবাদ সংস্থা এএনআই এক্স হ্যান্ডেলে যে ভিডিয়ো দিয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে, আদালতের বাইরে দাঁড়ানো ইডির গাড়ি থেকে নামছেন হেমন্ত। মুখে লেগে আছে চওড়া হাসি। আশপাশে দাঁড়িয়ে সমর্থকদের উদ্দেশে হাতও নাড়ান প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। এক সময়ে হাত জোড় করে নমস্কারের ভঙ্গিতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে।
গাড়ি থেকে নেমে আদালতে ঢোকা পর্যন্ত হাসিমুখেই ছিলেন হেমন্ত। তাঁকে ইডি আধিকারিকেরা ঘিরে রেখেছিলেন। রাঁচীর যে বিশেষ আদালতে তাঁকে হাজির করানো হয়েছে, সেখানে কেবল আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইনের মামলাই শোনা হয়।
জমি ‘দুর্নীতি’ মামলায় বুধবার রাতে হেমন্তকে গ্রেফতার করে ইডি। তার আগে রাজভবনে গিয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন। জেএমএমের তরফে জানানো হয়, বিধানসভায় তাদের দলনেতা হবেন রাজ্যের বর্তমান পরিবহণ মন্ত্রী চম্পই সোরেন। ইতিমধ্যে নিজের গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন হেমন্ত। শুক্রবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চে ওই মামলার শুনানি হবে।
যদিও প্রথমে ঝাড়খণ্ড হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন হেমন্ত। সেখান থেকে পরে আবেদন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
জমি জালিয়াতি মামলায় নাম জড়িয়েছে হেমন্তের। ৬০০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। তাঁকে গ্রেফতার করার আগে তাঁর রাঁচীর বাসভবনে সাত ঘণ্টা তল্লাশি চালায় ইডি। গত কয়েক দিন ধরেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর খোঁজ করা হচ্ছিল। রবিবার রাত থেকে হঠাৎ বিজেপির তরফে দাবি করা হয়, হেমন্ত ‘নিখোঁজ’। রবিবার শেষ বার দিল্লি বিমানবন্দরে নামতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। কিন্তু তার পরে ইডি হেমন্তের দিল্লির বাড়িতে গিয়েও তাঁকে পায়নি। এমনকি, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর জন্য দিল্লির ঝাড়খণ্ড ভবনেও খোঁজ করা হয়। সেখানেও ছিলেন না তিনি। ইডি হেমন্তের ফাঁকা বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে দু’টি বিএমডব্লিউ গাড়ি পায়। আর নগদ ৩৬ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করে। এর পরে প্রায় ৩০ ঘণ্টা ‘নিখোঁজ’ থাকার পরে রাঁচীতে নিজের বাড়ির সামনেই দেখা যায় হেমন্তকে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেখানে বসেই নিজের দল জেএমএম-এর বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেন হেমন্ত। বুধবার তল্লাশির তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।