প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত হিমাচলের একটি ছবি। —ফাইল চিত্র।
হিমাচল প্রদেশে দুর্যোগ চলছেই। শুক্রবারও সেখানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে মৌসম ভবন। বর্ষণের কারণে গোটা রাজ্যে হলুদ সতর্কতা জারি করার পাশাপাশি বিশেষ করে সতর্ক করা হয়েছে সোলান, শিমলা, কুলু, বিলাসপুরের মতো জেলাগুলিকে। দুর্যোগ চললে নতুন করে ভূমিধসের আশঙ্কা করছে রাজ্য প্রশাসন। আপৎকালীন পরিস্থিতির মোকাবিলায় রাজ্যের প্রায় সব জেলাতেই বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে মোতায়েন করা হচ্ছে।
মৌসম ভবনের অন্যতম বিজ্ঞানী সন্দীপ কুমারকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, আগামী ২৪ থেকে ২৫ অগস্ট ভারী বৃষ্টি চলবে হিমাচলের প্রায় সব জেলায়। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, মঙ্গলবারের আগে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা তেমন নেই। তবে রবিবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ একটু একটু করে কমতে পারে। মৌসম ভবন জানিয়েছে, গত জুন মাস থেকে অগস্ট মাস পর্যন্ত কেবল হিমাচলেই ৮০৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৪১ শতাংশ বেশি। গোটা হিমাচলে শুধু লাহুল স্পিতিতেই স্বাভাবিক বর্ষণ হয়েছে। ভূমিধসের জেরে বহু পর্যটক আটকে পড়েছেন কুলুতে। রাজ্যের অধিকাংশ অঞ্চল বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে হিমাচলের কুলুর আনিতে ভূমিধসের জেরে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বেশ কয়েকটি বহুতল। সেই ঘটনার ভয়ঙ্কর একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। যদিও ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, পাহাড়ের গায়ে জনবহুল একটি এলাকা। গায়ে গায়ে লাগোয়া প্রচুর বহুতল। আচমকাই সেই বহুতলগুলির মধ্যে কয়েকটি তাসের ঘরের মতো ধসে পড়ল। চারদিকে তখন চিৎকার-চেঁচামেচি আর আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু হয়ে গিয়েছিল। যদিও স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, বহুতলগুলিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় তিন দিন আগেই খালি করে দেওয়া হয়েছিল। ফলে প্রাণহানি এড়ানো গিয়েছে। কিন্তু যে ভিডিয়োটি প্রকাশ্য এসেছে, তা শিউরে ওঠার মতোই।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, বর্ষার মরসুমের শুরু থেকে অর্থাৎ গত ২৪ জুন থেকে এখনও পর্যন্ত ২৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে হিমাচলে। ৪০ জন নিখোঁজ। শুধু অগস্টেই হিমাচলে মৃত্যু সংখ্যা ১২০। অন্য দিকে, উত্তরাখণ্ডে পিন্ডারী নদী এবং সেটির শাখানদী প্রাণমতীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় চামোলি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।