সিএএ (২০১৯)-কে চ্যালেঞ্জ করে বিভিন্ন জনস্বার্থ মামলার শুনানি আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পিছিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল চিত্র।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ (২০১৯)-কে চ্যালেঞ্জ করে বিভিন্ন জনস্বার্থ মামলার শুনানি আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পিছিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই সংক্রান্ত প্রায় ২২০টি আর্জির বিচার করছেন। তবে এতগুলি আবেদনকে ভাগ করে এ বার বিচারপক্রিয়া এগিয়ে নিতে চাইছে শীর্ষ আদালত। এ ব্যাপারে আজ কেন্দ্রীয় সরকারকে নোটিস জারি করেছে শীর্ষ আদালত। চার সপ্তাহের মধ্যে তাদের জবাব দিতে বলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিত ও বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভট্টের বেঞ্চ আজ জানিয়েছে, সিএএ মামলার শুনানি তিন সদস্যের বেঞ্চে হবে।
২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর সিএএ-র বিরুদ্ধে আর্জির প্রথম শুনানি শুরু হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। ওই বছরেরই ১১ ডিসেম্বর সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার পর দেশ জুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। তার পরেও অবশ্য ২০২০-র ১ জানুয়ারি বিলটি আইনে পরিণত হয়।
সিএএ-র বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি মামলা করেছে। কংগ্রেস নেতা ও সাংসদ জয়রাম রমেশ, তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্র, এআইএমআইএম নেতা ও হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসি, কংগ্রেস নেতা দেবব্রত শইকিয়া, ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগ, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রিহাই মঞ্চ, অসম অ্যাডভোকেটস অ্যাসোসিয়েশন সুপ্রিম কোর্টে আর্জি দাখিল করে আইনটি বাতিলের দাবি তুলেছেন। রাজ্য সরকারগুলির মধ্যে কেরলই প্রথম সুপ্রিম কোর্টে এই আইনের বিরুদ্ধে মামলা করে।
যা নিয়ে এত বিরোধিতা, সেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনটিতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্শী ও খ্রিস্টান শরণার্থীরা ভারতের নাগরিকত্ব নিতে পারবেন। তবে তাঁদের ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর বা তার আগে ভারতে আসতে হবে। অ-মুসলিমদের এই আলাদা ভাবে নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে মামলাকারীরা। এ ছাড়া, জীবনযাপনের অধিকার, ধর্ম কিংবা জাতি, লিঙ্গ, জন্মস্থানের ভিত্তিতে বৈষম্য না করার সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুন্ন হয়েছে। আইনটি নাগরিকদের স্বাধীনতার অধিকারকেও খর্ব করছে। ফলে মোদী সরকারের পাশ করা এই আইন নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকারকে হরণ করছে বলেই অভিযোগ এনেছেন তাঁরা।
শীর্ষ আদালত সিএএ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে আগেও নোটিস জারি করেছিল। কেন্দ্রের বক্তব্য না শুনে আইনটিতে স্থগিতাদেশ দিতেও রাজি হননি বিচারপতিরা। ২০২০ সালের মার্চে কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে বলে, সিএএ কোনও নাগরিকের মৌলিক অধিকারকে হরণ করছে না। এবং সাংবিধানিক নৈতিকতা লঙ্ঘনেরও প্রশ্ন নেই। ফলে আইনটি বৈধ।