কলকাতায় করোনা টিকা নিচ্ছেন এক স্বাস্থ্যকর্মী। ছবি—রয়টার্স।
করোনা সংক্রমণ রুখতে আগামী মাস থেকে শুরু হতে চলেছে প্রবীণদের টিকাকরণ অভিযান। তাই আগামী দশ দিনের মধ্যে সব চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রতিষেধক নেওয়ার পরামর্শ দিল স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সূত্রের মতে, এ যাত্রায় না নিলে পরবর্তী সময়ে কোনও স্বাস্থ্যকর্মীর করোনার টিকা নেওয়ার ইচ্ছে হলে দেশের আমজনতার মতোই প্রতিষেধকের অপেক্ষায় থাকতে হবে সেই ব্যক্তিকে।
এক মাসে আগে দেশ জুড়ে টিকাকরণ অভিযান শুরু হয়েছিল। ত্রিশ দিনে প্রতিষেধক নিয়েছেন ৮৮.৫ লক্ষ ব্যক্তি। যাঁদের মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মী হলেন ৬১.১১ লক্ষ। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণের কথায়, এক কোটি স্বাস্থ্যকর্মীকে শুরুতে প্রতিষেধকের আওতায় নিয়ে আমাদের লক্ষ্য ছিল সরকারের। প্রথম দিকে প্রতিষেধক দেওয়ার হার কম থাকলেও, এক মাসে প্রায় ৬১ শতাংশ স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রতিষেধকের আওতায় নিয়ে আসা গিয়েছে। যদিও প্রায় ডজনখানেক রাজ্যের প্রতিষেধক দেওয়ার গড় জাতীয় গড়ের কম। ওই রাজ্যগুলিতে প্রতিষেধক দেওয়ার হার বাড়লেই সামগ্রিক ফলে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেই মত স্বাস্থ্য মন্ত্রকের। স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে ইতিমধ্যেই দ্বিতীয় ডোজ় নিয়েছেন ১.৭০ লক্ষ জন। স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গেই দেশের প্রায় দু’কোটি ফ্রন্টলাইন কর্মীকে গোড়াতেই প্রতিষেধকের আওতায় নিয়ে আসার ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যাঁদের মধ্যে ২৪.৫৭ লক্ষ ফ্রন্টলাইন কর্মীকেও প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় দেওয়া হয়েছে।
গত এক মাসে প্রায় ৯০ লক্ষ প্রতিষেধক প্রাপকদের মধ্যে মারা গিয়েছেন ২৭ জন। মৃত্যুর পিছনে প্রতিষেধকের কোনও ভূমিকা নেই বলে আজ ফের সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন-দুটি প্রতিষেধক বৈজ্ঞানিক ভাবে নিরাপদ হওয়া সত্ত্বেও ভারতীয় চিকিৎসকদের একটি বড় অংশ তা নিতে না চাওয়ায় ক্ষুব্ধ স্বাস্থ্য কর্তারা। আজ সেই ক্ষোভ উগরে দিয়ে নীতি আয়োগের সদস্য বিনোদ পল ইঙ্গিত দেন, যাঁরা নেননি তাঁদের তালিকা আমাদের কাছে আছে। আগামী ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ চলবে। তার মধ্যে প্রথম দফার প্রতিষেধক স্বাস্থ্যকর্মীরা নিয়ে নিক এমনটাই চাইছে কেন্দ্র। স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রের মতে, টিকাকরণ অভিযান বাধ্যতামূলক না হওয়ায় যাঁরা নিতে চাইছেন না তাঁদের জোর করা সম্ভব নয়। কিন্তু ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারির পরে প্রতিষেধক নেওয়ার প্রশ্নে চিকিৎসককে বাড়তি আর কোনও সুবিধে দেওয়া হবে না। পরে প্রতিষেধক নেওয়ার হলে আর পাঁচ জনের মতো ওই স্বাস্থ্যকর্মীকে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হবে।